ছোট থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর করে প্রাথমিকে ঝরে পড়া রোধ করতে এ স্কুলটিতে রয়েছে সম্পূর্ণ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবস্থা, ডিজিটাল হাজিরা, সিসি ক্যামেরাসহ নানা ধরনের ডিজিটাল সব প্রযুক্তি। এসব প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক গণ্ডি থেকেই প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রাথমিকে ঝরে পড়া রোধ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে চুয়াডাঙ্গায় দেশের প্রথম আলোকিত ‘স্মার্ট স্কুল’ চালু করা হয়েছে। লক্ষ্য- কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর ও আগামীর আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল, তাই স্কুলটিতে ভিন্নতা আছে বেশ। গোটা স্কুল নানা রঙে সাজিয়ে শোভাবর্ধন করা হয়েছে শিশুদের দৃষ্টিনন্দন করতে। ডিজিটাল হাজিরাসহ শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে।
স্কুলটির একজন অভিভাবক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, কিছুদিন আগেও ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে চাইতো না। কিন্তু স্কুলটি দৃষ্টিনন্দন করতে প্রতিটি দেয়ালে নানা রঙের রং তুলি, নজরকাড়া ছবি ও কার্টুন আঁকা হয়েছে। যাতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে সহজেই স্কুলমুখী হয়।
বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিহা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, নানান রঙে নানা বর্ণে সজ্জিত ও সম্পূর্ণ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে পড়ালেখা করতে পেরে তারা খুশি। সকালে স্কুলে পৌঁছানোর পর থেকেই ডিজিটাল হাজিরার মাধ্যমে শুরু হয় প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা। এরপর প্রতিটি ক্লাসে থাকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের ব্যবস্থা।
পীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকমাস আগেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি হার ছিল উদ্বেগজনক। কিন্তু যখনই বিদ্যালয়টি নানা রঙে সজ্জিত হয়ে পুরোটাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠলো তখন থেকেই বেড়েছে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার। তাই এবার এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর ও আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য।
দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনাকারী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াশীমুল বারী। এ ব্যাপারে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু সদর উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম পীরপুর। উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কিছুটা সন্তোষজনক হলেও ওই গ্রামে শিক্ষার্থী উপস্থিতি হার অনেকটা কম ছিল। সেখান থেকেই চিন্তা করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে এ ধরনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে।
তার মতে, এমন উদ্যোগ শিশুদের স্কুলমুখী করতে দারুণভাবে উৎসাহিত করবে। একই সঙ্গে প্রতিটি শিশু প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গড়ে উঠবে। আর এতে করেই দেশ ডিজিটাল বিনির্মাণে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মার্ট স্কুলটি নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছরের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল হিসেবে সরকারি অর্থায়নে এ বিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে বলেও জানান ইউএনও ওয়াশীমুল বারী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
জিপি