সোমবার (২৩ জুলাই) দিনগত রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব, ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার শাকিল ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফয়েজুল নীরব।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, সোমবার রাতে অভিযুক্ত শাকিল গণরুমে এসে আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। এসময় তাকে আমার পরিচয় দেই। কিন্তু আমার সর্দিজনিত সমস্যার কারণে জোরে পরিচয় দিতে পারছিলাম না। এসময় হলের নাম জোরে উচ্চারণ না করায় শাস্তিস্বরূপ তারা আমাকে মুরগি (হাত পা মুড়িয়ে এক ধরনের শাস্তি) হতে বলে। আমি তাদের কথা মতো পাঁচবার মুরগি হই।
তিনি আরও বলেন, পরে তারা আবার আমাকে গণরুমের জানালার গ্রিল ধরে ঝুলতে বলে। কিন্তু আমার হাতের তালু কাটা থাকায় তাতে অস্বীকৃতি জানাই। এসময় শিহাব আমাকে কিল ঘুষি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে ধারাবাহিক থাপ্পড়ে আমার কান ফেটে যায়। আমি সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাই। পরে আমার বন্ধুরা ধরাধরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে এসে শিহাব ও নীরবসহ চার পাঁচজন আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এনাম মেডিক্যালে যেতে চাইলেও তারা আমাকে যেতে বাধা দেয়। পরে হলে ফিরে আসি। এরপর বিকেলে অবস্থা খারাপের দিকে গেলে। অন্যদের সহায়তায় আমাকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনার দায় স্বীকার করে অভিযুক্ত ফয়েজুল নীরব বলেন, তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে পরিচয় দিতে দেরি করে। পরে আমরা তাকে কিছু নির্দেশনা দিলে তা পালনে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় আমাদের বন্ধু শিহাব ফয়সালকে মেরে বসে। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। তবে বিষয়টি এত বড় আকার ধারণ করবে তা আমরা বুঝতে পারিনি।
এদিকে অভিযুক্ত মো. শিহাব ও সারোয়ার শাকিলের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ বলেন, এ ধরনের ঘটনা নির্মম, নিষ্ঠুর, লোমহর্ষক। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা আজকের মধ্যে লিখিত অভিযোগ দেবেন।
এ ব্যাপারে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ঘটনা জানার পরই হল প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এটা যেহেতু হলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার তাই হল প্রশাসনই ব্যবস্থা নেবে। আর হল প্রশাসন যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাহলে প্রক্টরিয়াল টিম সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মওলানা ভাসানী হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে কান ফাটানোর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও প্রতিবছরই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে নানা দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
এএটি