ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে ১০ দিনের আল্টিমেটাম শেষে গত ২০ জুলাই সব শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। ২৫ জুলাই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও জুনিয়র মেডিক্যাল কর্মকর্তারা।
সোমবার (৩ আগস্ট) আন্দোলনের ১৫তম দিনে শিক্ষার্থী-ইন্টার্ন চিকিৎসক-জেএমও’দের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসে দাবিপূরণের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটি।
কমিটির আহ্বায়ক ও গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফরিদা আদিব খানম বলেন, প্রয়োজনীয় সব ধরনের কাগজপত্রসহ আমরা গত ১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির আবেদন ফরম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। আবেদনে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের অধীনে এমবিবিএস, বিডিএস, ব্যাচেলর ও মাস্টারস অফ ফিজিওথেরাপি, ব্যাচেলর অফ নার্সিং কোর্স, মোট ৪টি কোর্স অধিভুক্তির অনুরোধ জানানো হয়েছে। আশা করছি, অতিদ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা পরবর্তী নির্দেশনা পাবো।
আলোচনা শেষে কমিটির কাছে আন্দোলন স্থগিতের সর্বশেষ ঘোষণাপত্র অনুযায়ী অধিভুক্তির পরবর্তী সব কার্যক্রমে নির্বিঘ্নে এগিয়ে নেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবিতে প্রায় তিনঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক লায়লা পারভীন বানু, বর্তমান উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক দেলওয়ার হোসেন, গমেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফরিদা আদিব খানম, শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ শাখার মহাপরিচালক ডা. একেএম রেজাউল হককে।
পরবর্তীতে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে সভার কার্যবিবরণীতে অধিভুক্তির কাজ নির্বিঘ্নে এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি তাৎক্ষণিক লিখিত হিসাবে সব শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার ও ইন্টার্ন চিকিৎসক-জেএমও’দের কর্তব্যে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে নোটিশ দেওয়া হয়।
২০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জয়দেব বসাক জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তির লক্ষ্যে গঠিত কমিটির প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমাদের। অতিদ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন আমাদের শিক্ষকরা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কমিটির কার্যক্রম এবং আমাদের আন্দোলন অনেক সফলতা অর্জন করেছে। সম্মানিত শিক্ষকদের আশ্বাস ও লিখিত নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিতের জন্য সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে, আমাদের আন্দোলন শেষ নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির পরবর্তী সব কার্যক্রম আমরা পর্যবেক্ষণ করবো এবং নিয়মিত খোঁজখবর রাখবো। যদি কখনো কোনো ধরনের অসঙ্গতির প্রমাণ পাওয়া যায়, কোনো ধরনের আল্টিমেটাম ছাড়াই একযোগে আমরা সব শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক-জেএমও’রা কঠোর আন্দোলনে নামবো।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, রোববার সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিয়েছেন। দায়িত্বে ফিরেছেন সাভার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য সাবসেন্টাররে কর্তব্যরত সব ইন্টার্ন চিকিৎসক ও জুনিয়র মেডিক্যাল কর্মকর্তা। আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৯
এএটি