রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি অমর একুশে, নতুন কলাভবন, পুরাতন প্রশাসনিক ভবন হয়ে মুরাদ চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, উপাচার্য কোনো তদন্তের দিকে না গিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তিনি একবার বললেন শোভন-রাব্বানী ৪-৬ পারসেন্ট চাঁদা দাবি করেছেন। আবার গতকাল চ্যানেল আইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কোনো কথাই হয়নি। তার এরকম মিথ্যাচার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছে। উপাচার্যকে তদন্ত করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, জাহাঙ্গীরনগরের এই দুর্নীতির করাল গ্রাস দেশের সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। উপাচার্য, ছাত্রলীগ আপনার কাছে টাকা চেয়েছে এই খবর কেন এতোদিন প্রকাশ করেননি? আমরা যখন আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করি, তখন আপনি আমাদের নামে মামলা করেন। আপনাকে বহিরাগত কেউ টাকার জন্য চাপ দিল তবু আপনি থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। এতে বোঝা যায়, আপনি নিজেও একজন দুর্নীতিবাজ। তাই আমরা এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
এদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে টাকা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই এর আগে আন্দোলনকারীদের কোনো কর্মসূচি পালনের কথা না থাকলেও, ‘উপাচার্য উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন’ শোভন-রাব্বানীর এমন বক্তব্যের পরে রোববার ফের এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে একনেক অনুমোদিত ১৪শ ৪৫ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। তবে ওই মহাপরিকল্পনাকে ‘অপরিকল্পিত’ দাবি করে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। এর মধ্যে ওই প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
পরে টাকা লেনদেনের অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের চাপে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনা সভায় তোপের মুখে হল স্থানান্তর ও অংশীজনের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের ১ নম্বর ও ৩ নম্বর দাবি মেনে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ২ নম্বর দাবি দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে বুধবার আবারও আলোচনায় বসবে দু’পক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯
এএ