শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বহিরাগত মাদকসেবীরা দলবদ্ধভাবে ওই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়।
এদিকে ঘটনার পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজের মূলফটকের সামনে পাবনা-ঈশ্বরদী সড়কে প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পরে কলেজ অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মজুমদার ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম শওকত আলী খান ও কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেন উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কলেজ প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হামলাকারীদের গ্রেফতার ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে হলে ফিরে আসেন তারা।
হলের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, মাদকসেবীরা দলবদ্ধভাবে শনিবার হলে প্রবেশ করে আমাদের ওপর গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করেন। হলের প্রত্যেকটা রুমের দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে আমরা যারা প্রতিবাদ করেছিলোম। সেসব রুমে প্রবেশ করে রুমের মধ্যে ভাঙচুর ও আমাদের মারধর করেন। একপর্যায়ে হলের সব শিক্ষার্থীরা একযোগে রুম থেকে বেরুলে তারা গুলি চালিয়ে ও বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায়।
হামলাকারীদের প্রত্যেকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসেছিল। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের দাবি ও হামলাকারীদের গ্রেফতার না করা হলে আমরা মাঠে নামবো।
হলের অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের আশপাশের এলাকার অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা হলের মধ্যে ঢুকে মাদকসেবন করেন। শুধু মাদকই সেবন করে না সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলরুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তাদের বাধা দিলে হলের মধ্যে বা কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে আমাদের মারধর করে থাকেন। আমরা অনেকবার কলেজ প্রশাসনকে বিষয়টি জানলেও তারা এর প্রতিকার করেনি। উপুর্যপরি কলেজ প্রশাসন আমাদেরই দোষারোপ করে থাকেন।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটি আসি। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করে আমার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন। সেটি অবশ্যই প্রশাসিনকভাবে দেখা হবে। হলের নিরাপত্তা ও শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিম আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে কলেজ প্রশাসনের মাধ্যমে সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি নাছিম আহম্মেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
এএটি