সম্প্রতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আলী আসগর একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভয় দেখানোর অভিযোগে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডির পর একই অভিযোগে পাল্টা জিডি করেন অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম। শুধু তাই নয়, বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।
এদিকে, দুই শিক্ষকের মধ্যে রেষারেষি থেকে অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম ও অধ্যাপক আলী আসগর নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছেন। জিডিতে অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম অধ্যাপক আলী আসগরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে দেওয়া অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন অধ্যাপক আসগর আলী।
অপরদিকে আলী আসগর বিভাগ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে করা রিট তুলে না নিলে অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম তার ক্ষতি করবেন এমন অভিযোগ এনে তিনিও জিডি করেছেন।
তাদের এই জিডির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থীদের এগ্রিক্যামেস্ট্রি ও বায়োক্যামেস্ট্রি-২ মিলিয়ে একত্রে ৫০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হয়। এগ্রিক্যামেস্ট্রি কোর্সটি পড়ান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং বায়োক্যামেস্ট্রি কোর্সটি অধ্যাপক আলী আসগর ও অধ্যাপক যুগোল কুমার সরকার যৌথভাবে পড়ান।
নিয়ম অনুযায়ী যারা ব্যবহারিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবেন মূল নম্বরপত্রে অবশ্যই তাদের স্বাক্ষর থাকতে হবে। কিন্তু পরীক্ষার দিন অধ্যাপক যুগোল কুমার উপস্থিত থাকলেও ব্যবহারিকের মূল নম্বরপত্রে তার স্বাক্ষর নেই। মূল নম্বরপত্রে শুধু অধ্যাপক আলী আসগর ও অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
অধ্যাপক যুগোল কুমার বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ওই কোর্সের ব্যবহারিক পরীক্ষায় ৩ জন শিক্ষার্থী পাস মার্ক থেকে দু-এক মার্ক কম পায়। ব্যবহারিকে ফেল করলে শিক্ষার্থীদের পুনরায় ওই বর্ষেই থাকতে হয়। তাই অধ্যাপক আলী আসগরকে অনুরোধ করেছিলাম বিশেষ বিবেচনায় পাস করিয়ে দেওয়া যায় কি না। তিনি শোনেননি। মূল নম্বরপত্র তৈরি করে তার সঙ্গে খসড়া কপি সংযুক্ত করে আমার স্বাক্ষর ছাড়াই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
তবে অধ্যাপক আলী আসগর বলেন, যখন নম্বরপত্র তৈরি করেছি তখন অধ্যাপক যুগোল কুমার অনুপস্থিত ছিলেন। আর অধ্যাপক যুগোল কুমারের হাতে দুয়েকজন শিক্ষার্থী ফেল করে। তিনি আমাকে সেসব শিক্ষার্থীকে জোর করে পাস করিয়ে দিতে বলেন। আমি দেইনি। তাই সে স্বাক্ষরও করেনি।
শিক্ষার্থীদের অবৈধপন্থায় ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম গত ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দেন। এর আগে অধ্যাপক খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রারের কাছে অসদাচরণের লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যাপক আলী আসগর।
নাম গোপন রাখার শর্তে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক আছেন যারা তাদের পছন্দের শিক্ষার্থীদের বেশি নম্বর দেন। যাদের অপছন্দ হয় তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে তারা ফেলও করিয়ে দেন। আমরা এমনটি আর দেখতে চাই না। বিভাগে ছাত্র-শিক্ষক সুসস্পর্ক বজায় থাকুক আমরা সেটাই চাই।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। বিভাগের একাডেমিক সভায় আমি শিক্ষকদের পরস্পরের ভুল বোঝাবুঝি থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ করেছি। আমি আবারও এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলবো।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
এসএইচ