সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর উত্তরায় আইইউবিএটির ক্যাম্পাসে অগ্রহায়ণকে স্বাগত জানিয়ে বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও গান, কবিতা আর নৃত্যের তালে তালে তুলে ধরা হয় গ্রাম বাংলার আবহমান নবান্নের ঐতিহ্য। শুধু গানবাজনাই নয়, আগত ব্যক্তিদের নবান্নের আপ্যায়নও করা হয়েছিল শীতের ঐতিহ্যবাহী পিঠা আর মুড়ির মোয়া ও মুড়কি দিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচারাল সাইন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিপুণ হাতে পুরো ক্যাম্পাস সেজে ছিল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহারি সাজে। উৎসবে আনন্দে মেতে ছিল আইইউবিএটির হাজারো শিক্ষার্থী।
এদিকে, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ‘নবান্ন; আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য’ বিষয়ের ওপর আলোচনা সভা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আইইউবিএটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হামিদা আখতার বেগম। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশাসন ও ফিন্যান্স শাখার পরিচালক মো. শাহ আলম। সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক ড. মজিবুর রহমান খান। এছাড়া সভায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. এম এ হান্নান, অধ্যাপক ড. অনিল চন্দ্র বসাক, অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, অধ্যাপক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ড. ফেরদৌস আহমেদ।
দিনব্যাপী উৎসবে নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল প্রদর্শনী, পিঠা উৎসব, বিপণী প্রতিষ্ঠান, শাড়ি, গয়না ও খাবারের মেলা। বিকেলে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নিয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন এবং আইইউবিএটির ট্রেজারার অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আইইউবিএটির শিক্ষার্থীরা যেভাবে নবান্ন উৎসব উদযাপন করে তা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এত সুন্দর উদযাপন মনে হচ্ছে আমি আমার ছেলে বেলায় চলে এসেছি।
আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. এম আলিমউল্যা মিয়ানর উদারহণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা ভাগ্যবান এমন একজন মানুষের গড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সুযোগ পেয়েছো। আমার সুযোগ থাকলে আমিও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে যেতাম।
তিনি শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে আরও বলেন, তোমরাই আগামীর আলো, যেখানেই থাকো বেশি বেশি করে কোকারিকুলামের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
আইইউবিএটির ট্রেজারার অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস বলেন, মূল শিক্ষার মতোই আমরা সহশিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। নবান্ন উৎসব-১৪২৬ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইইউবিএটির কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচারাল সাইন্সেস অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং ভবিষ্যতেও আরও বড় করে আয়োজন করার আহবান জানান।
সুনিপুণ দক্ষতায় বাংলার সংস্কৃতি ঐতিহ্য তুলে ধরার কারণে কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচারাল সাইন্সেস অনুষদের দশম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীকে এবারের নবান্ন রাজকন্যা ঘোষণা করেন।
আইইউবিএটি নবান্ন উৎসবে প্রদর্শনী, পিঠা উৎসব, বিপণী প্রতিষ্ঠান মধ্যে থেকে প্রথম তিনটি স্টলকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
নবান্ন উৎসবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই ও আগত অতিথিরা। নবান্ন উৎসব-১৪২৬ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচারাল সাইন্সেস অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. ফারজানা সুলতানা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
আরআইএস/