ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ক্যাম্পাস সচল করাসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
ক্যাম্পাস সচল করাসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ জাবিতে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ। ছবি: বাংলানিউজ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, উপাচার্য অপসারণের দাবিতে চলা আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার বিচারসহ তিনদফা দাবিতে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল করেছে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারের আন্দোলনকারীরা।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বর থেকে মিছিল বের করে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।

সমাবেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, 'চার মাস হতে চললো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ের সুরাহা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, হল খালি করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করছি।

তিনি বলেন, প্রশাসনকে জানা উচিৎ কোনোভাবেই এই আন্দোলন দমন করা যাবে না। আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। হল ভ্যাকেন্টের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ণ সিন্ডিকেট সদস্যদের মতের ভিত্তিতে। সুতরাং, হল ভ্যাকেন্টের এই অবৈধ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।

এসময় আগামী ৩ ডিসেম্বর উপাচার্যের দুর্নীতির খতিয়ান পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করার ঘোষণাও দেন তিনি।

সমাবেশে ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, সারাদেশ জানে জাহাঙ্গীরনগরে দুর্নীতি হয়েছে। যারা টাকা পেয়েছে তারা সারাদেশের মানুষের সামনে স্বীকার করেছে যে টাকা পেয়েছে। উপাচার্য যদি দুর্নীতি না করে থাকেন, তাহলে সারাদেশের মানুষের সামনে সেটা প্রমাণ করুন যে উপাচার্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। দুর্নীতিবাজকে রক্ষা করার জন্য অগণতান্ত্রিকভাবে হল বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এভাবে ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকির মধ্যে ফেলা দেওয়া হয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলাম কিন্তু অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের মদদে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা করা হয়েছে। এই হামলার পরে অধ্যাপক ফারজানা আর এক মূহুর্তের জন্যও উপাচার্য পদে থাকতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভয় পেয়ে ফারজানা ইসলাম হল খালি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রেখেছেন। তার অপসারণের মধ্যে দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, ফারজানা ইসলামকে ব্যঙ্গ করার জন্য একজন শিক্ষার্থীর নামে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার মোকাবিলা এই প্রশাসন করতে পারে নাই।

ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ রয়েছে। এখানে উপস্থিত সবাই জানে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম কেন অনৈতিক ভাবে হল বন্ধ করে রেখেছেন। চুরি করলেই তার শাস্তি পাওয়ার ভয় থাকে সেই ভয় থেকে ফারজানা ইসলাম এই কাজ করছেন। হল খোলার জন্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। শর্ত দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলনকারী ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।