ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

দুর্নীতির অভিযোগ ‘অসত্য’ দাবি রাবি অধ্যাপকের

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২০
দুর্নীতির অভিযোগ ‘অসত্য’ দাবি রাবি অধ্যাপকের

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের আধুনিকায়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন অভিযোগ ওঠা গ্রন্থাগারের সাবেক প্রশাসক অধ্যাপক ড. সফিকুন্নবী সামাদী।

তার দাবি, প্রকল্পের কাজে কোনো আর্থিক বা প্রক্রিয়াগত অনিয়ম হয়নি। হেকেপ’র ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রকল্পের যাবতীয় কাগজপত্র তদন্ত করে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন। এর আগে অধ্যাপক সামাদী প্রকল্পের টাকায় গ্রন্থাগারের উন্নয়নে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন এমন সংবাদ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেশকিছু গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।

গ্রন্থাগারের অবকাঠামোগত ও অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের লক্ষে হেকেপ’র (হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট) অর্থায়নে ২০১৪ সালের ১ জুলাই ‘অটোমেশন অ্যান্ড ডিজিটালাইজেশন অব রাজশাহী ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল লাইব্রেরি’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা। ওই সময় গ্রন্থাগারের প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক সামাদী। তবে ২০১৭ সালের ১৪ জুন অধ্যাপক সামাদী গ্রন্থাগার প্রশাসকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সামাদী বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ১১ হাজার টাকা দামের দুটি কলম কেনার কাল্পনিক গল্প বলা হয়েছে। ওই প্রকল্পের ৫-১০ টাকা দামের সাধারণ কিছু কলম ক্রয় করা হয়েছিল। সেগুলোর দাম কোনোভাবেই ৫০ টাকার বেশি হবে না।

তিনি বলেন, আমি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক হিসেবে উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব গ্রহণ করি। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই আমাকে গ্রন্থাগারের প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেন। তিনি ৪৭১তম সিন্ডিকেট সভায় আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হেকেপও নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ওই উপ-প্রকল্পের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

অধ্যাপক সামাদী বলেন, হেকেপের প্রতিনিধিদল তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ওই প্রকল্পে কোনো আর্থিক বা প্রক্রিয়াগত অনিয়ম হয়নি। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি তদন্ত চালিয়ে যায়। তিনি কমিটিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান তদন্ত কমিটি গঠনের প্রায় ১৮ মাস পরে ৪৯০তম সিন্ডিকেট সভায় ওই তদন্তের প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। কিন্তু সিন্ডিকেট সদস্যদের প্রতিবেদনের কোনো কপি না দিয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

প্রকল্পের কাজের ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রকল্পের সব কাজ হেকের ঢাকার দপ্তরের মাধ্যমে অনুমোদনের পর বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রকল্পের জন্য ল্যাপটপ ক্রয় বিলাসিতা নয়, কাজের অংশ। ল্যাপটপটি অ্যাপলের হওয়ায় তার অপারেটিং সিস্টেম লাইসেন্সড। সেই ল্যাপটপের জন্যই লাইসেন্সড মাইক্রোসফট অফিস কেনা হয়েছিল। হেকেপের ক্রয়বিধি অনুযায়ী একটি নয় চারটি ল্যাপটপ কেনা হয়েছিল। আর প্রকল্পের কাজের জন্য বিদেশ ভ্রমণ যৌক্তিক বলেই হেকেপের অনুমোদন পেয়েছিল। প্রকল্পে আরএফআইডি ট্যাগের টাকা গায়েব করার কথা হাস্যকর। দুই কিস্তিতে এক লাখ ৮০ হাজার ট্যাগ গ্রন্থাগারের রিডিং ম্যাটেরিয়ালে লাগানো হয়েছে। বাকি ২৭ হাজার অব্যবহৃত ট্যাগ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক সামাদী বলেন, ডাটা এন্ট্রির জন্য ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। প্রকল্পের কর্মকর্তারা যে ৮২ হাজার নির্ভুল ডাটা বুঝে নিয়েছেন তারই বিল দেওয়া হয়েছে। হেকেপের বিধান অনুযায়ী রি-অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন করে অনুমোদন নিয়ে এ খাতের টাকা অন্য খাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটি বর্তমান উপাচার্য অনুমোদন দিয়েছিলেন।

অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, আমি উপাচার্যে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করেছি। এ কারণেই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে প্রতিশোধমূলকভাবে তিনি একের পর এক আমাকে হয়রানি করে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এক্রাম উল্যাহ, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২০
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।