সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বর সংলগ্ন ব্রিজে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সংগঠক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম এখন বাংলাদেশে দুর্নীতির মডেলে পরিণত হয়েছেন। উপাচার্যের মদদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। একজন আত্মস্বীকৃত হামলাবাজকে অপসারণের জন্য তদন্তের প্রয়োজন পড়ে না। উপাচার্যের অপসারণের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্কমুক্ত করার জন্য আমরা আজ ঝাড়ু হাতে নিয়েছি। প্রয়োজনে আমরা জুতা নিক্ষেপের মতো কর্মসূচি হাতে নেবো। উপাচার্যকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই জুতা নিক্ষেপ করা হবে। ’
ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদের সঞ্চালনায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রশীদ গাজী মুন বলেন, ‘আজ বিশ্ববিদ্যালয় দুঃসময় চলছে। দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারীর সর্বোচ্ছ পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন তিনি। কিন্তু আমরা চুপ থাকবো না। সব অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের কণ্ঠ সর্বদা জারি রাখতে হবে। আমরা আশা করবো এ উপাচার্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যাবেন। ’
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শাকিল উজ্জামান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু উপাচার্য আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়েছেন। নৈতিক আন্দোলন বন্ধ করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছেন। এ দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের কাছে আমরা নিরাপদ নই, এ বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ নয়। ’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সংগঠক ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘উপাচার্য একজন আত্মস্বীকৃত হামলাবাজ। কারণ ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের একাংশের হামলার পর তিনি তাদের অভিবাদন জানিয়েছিলেন। গণঅভ্যুত্থান বলে অভিহিত করেছিলেন। এ রকম একজন আত্মস্বীকৃত হামলাবাজ উপাচার্যকে আমরা মানতে পারি না। ’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে এবং ছাত্রফ্রন্টের সদস্য কনোজ কান্তি রায় প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৪৪৫ কোটি টাকার অনুমোদন দেয় একনেক। এরপর থেকে মাস্টারপ্ল্যানের পুনর্বিন্যাস, টেন্ডারে আহ্বানে অস্বচ্ছতা সহ নানা অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। পরবর্তীতে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে উপাচার্য অপসারণের দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। আর এ দাবিতে গত বছরের ৪ নভেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করেন তারা। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের একটি অংশ হামলা চালায় আন্দোলনকারীদের ওপর। এ হামলায় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
এফএম