ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বন্ধ বিদ্যালয়, ফল প্রকাশের পর নেই হুল্লোড়-উল্লাস

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
বন্ধ বিদ্যালয়, ফল প্রকাশের পর নেই হুল্লোড়-উল্লাস

ঢাকা: প্রতিবছর বোর্ড পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে নিজের প্রত্যাশিত ফল দেখার পর আনন্দে গা ভাসায় শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের উৎকণ্ঠা ও উত্তেজনা নিমেষেই উড়ে যায় তখন। প্রত্যাশিত ভালো ফলের খুশিতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, চিৎকার করে, বাদ্যের তালে নেচে-গেয়ে যে যেভাবে পারে, মেতে ওঠে আনন্দ উল্লাসে। তবে এবার নেই তার কিছুই।

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার ফল প্রকাশের দিন বিদ্যালয়ে আসতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। ফলে দেখা মেলেনি শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উল্লাসেরও।

করোনা পরিস্থিতির অন্যান্য দিনের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ছিল বন্ধ। তাই বিদ্যালয়ে আসার পরিবর্তে বাসাতেই পরিবারের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস আর দু:খ ভাগাভাগি করে সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৩১ মে) এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, এবছর সব শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি, মাদ্রাসা, কারিগরি ও এসএসসি (ভোকেশনাল) মোট ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন৷ এরমধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ৪৯০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পাস করেছে ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯২ জন। ফেল করেছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৯৮ জন।

বিদ্যালয়ে নোটিশ বোর্ডের পরিবর্তে এবার ইন্টারনেট এবং মোবাইলের এসএমএস'র মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ে আসতে না পেরে, সহপাঠীদের ফলাফল জানতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থীই।

ফারিয়া মেহজাবিন নামে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া রাজধানীর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, ১০ বছর পর কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেখে খুব ভালো লাগছে। ভাবতে পারছি না এতো ভালো রেজাল্ট করতে পেরেছি। আমার এ অর্জন আমার বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকার কঠোর অনুশাসনের ফসল। আনন্দের এই মাহিন্দক্ষণে কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের সবাইকে। কিন্তু বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষক এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি বা তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারিনি। এটা খুবই খারাপ লেগেছে। খুব ভালো একটা দিন, তবে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য আজ বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দিনটা অন্যরকম হয়ে গেল।

রাইসা হাবিব নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিবছর স্কুল প্রাঙ্গণে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে নিজের প্রত্যাশিত ফল দেখার পর আনন্দে গা ভাসায় শত শত শিক্ষার্থীরা। একে অপরকে জড়িয়ে, চিৎকার করে, বাদ্যের তালে নেচে-গেয়ে যে যেভাবে পারে আনন্দ-উল্লাস করে। আমাদেরও কত স্বপ্ন ছিল, কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তার কিছুই হলো না। ভালো ফলাফলে ভালো করার পাশাপাশি এটা একটা খারাপ লাগার বিষয়। কবে ভালো সময় আসবে বলেই প্রত্যাশা করি।

আফরোজা ফেরদৌসি নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ের এসএসসিতে জিপি-৫ গোল্ডেন পেয়েছে এজন্য সর্ব প্রথম সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই। তাছাড়া তার রেজাল্টের পেছনে স্কুল কর্তৃপক্ষের অবদান আছে, তাদেরকে অভিনন্দন জানাই। কিন্তু বিদ্যালয় বন্ধ এবং লকডাউন পরিস্থিতির কারণে এবার কারো সঙ্গে দেখা করা বা সৌজন্য বিনিময়টা খুব কমে হয়েছে। এটা সন্তানদের সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মাকেও কষ্ট দেয়। তবে বিদ্যালয় খুললে অবশ্যই সকলের সঙ্গে দেখা হবে, এই প্রত্যাশা।

এদিকে বিদ্যালয়ে আসতে না পারলেও পরিবারেই বাবা-মা, ভাই-বোনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে সময় কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
এইচএমএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।