ঢাকা: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহান এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ শুনানি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ে ইউজিসিতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে বুধবার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন কমিশনের একজন কর্মকর্তা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট, ১৯৭৩ পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গণশুনানি সেই অ্যাক্টের পরিপন্থি বলে মনে করছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ইউজিসির একজন কর্মকর্তা জানান, রাবি ভিসির অনুরোধে গণশুনানির উদ্যোগ নেয় ইউজিসি। গণশুনানিতে দুই পক্ষকেই ডাকা হয়েছে। ইউজিসির দুই সদস্য গণশুনানি করবেন। ইউজিসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক গোলাম দস্তগির সদস্য সচিব হিসেবে গণশুনানি করবেন।
রাবির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা দাবি করেন, সদস্য সচিব হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি কোনোভাবে রাষ্ট্রপতি মনোনীত ভিসি-প্রোভিসির গণশুনানি করতে পারেন না।
‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ব্যক্তিবর্গ’-এর পক্ষ থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে এক ধরনের অচল অবস্থা বিরাজ করছে। দীর্ঘ লকডাউনের পর অফিস আদালত সীমিত পরিসরে খুললেও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্ণধার উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনে গণশুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য পত্র দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা শুনেছি, পত্র-পত্রিকায় দেখেছি এবং তদন্তও হয়েছে। কিন্তু গণশুনানির কথা আমরা শুনিনি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইউজিসির এই পদক্ষেপ উপাচার্যের অসম্মান তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের অসম্মান। এছাড়া ইউজিসির কর্তৃক গঠিত কমিটির নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে উপস্থিত হতে হবে সেটা ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট পারমিট করে কিনা আমাদের বোধগম্য নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সচেতন ব্যক্তিবর্গ জানি বর্তমান উপাচার্য একজন সহজ, সরল ও নিরঅহংকার ব্যক্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সকলকে সাথে নিয়েই করছেন। কিছু কুচক্রী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থে ব্যার্থ হয়ে নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে। উপাচার্য মহোদয়ও ইউজিসির তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে সেই তদন্ত অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে করতে হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ব্যক্তিবর্গ ইউজিসি কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি, বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত করা হোক।
এর আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের দেওয়া বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে গণশুনানির উদ্যোগ নেয় ইউজিসি। রাবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পিএম সফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাত আরা বেগম ও ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মু. আলী আসগরকে উপস্থিত থাকর জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০
এমআইএইচ/এমজেএফ