ঢাকা: ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর মাধ্যমে দেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এই অনুমোদন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে উপবৃত্তি বিতরণে সরকারি খরচ এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসবে।
নগদকে অনুমতি দেওয়ার চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান (৩য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় উপবৃত্তি দিতে সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’কে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য গত ৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত চিঠি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প (৩য় পর্যায়) এর প্রকল্প পরিচালককে পাঠানো হয়।
নগদের মাধ্যমে দ্রুত উপবৃত্তির কার্যক্রম শুরু হবে বলে শনিবার (১০ অক্টোবর) বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
মন্ত্রণালয় ও নগদ থেকে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে শিউরক্যাশ নামে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সেবা সংস্থার মাধ্যমে ক্যাশ-আউট চার্জ এবং ডেটা ম্যানেজমেন্টের জন্য হাজারে সব মিলে সাড়ে ২১ টাকা পেতো সরকারের কাছ থেকে। তবে নগদ হাজারে মাত্র সাড়ে ৭ টাকায় পুরো সেবা দেবে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, নগদ আমাদের ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান। নগদের মাধ্যমে আমাদের অনেক টাকা খরচ বাঁচবে।
জানা গেছে, শিওর ক্যাশ ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা ক্যাশ আউটের জন্যে সরকারের কাছ থেকে বৃত্তির মোট টাকার ওপরে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, অর্থাৎ এক হাজারে সাড়ে ১৮ টাকা পেতো। তার সঙ্গে ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্যে হাজারে আরও ৩ টাকা চার্জ করতো। এ ক্ষেত্রে পুরো কাজটি ‘নগদ’ করে দেবে হাজারে সাড়ে ৭ টাকায়। তবে ক্যাশ-আউটের জন্যে বাড়তি যা লাগে সেটা ‘নগদ’ যোগ করেই উপবৃত্তির সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের পাঠাবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত এপ্রিল, মে এবং জুন এই তিন মাসের উপবৃত্তিও ‘নগদ’ বিতরণ করবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য পেয়ে গেলে চলতি মাস থেকেই আগের তিন মাসের উপবৃত্তি পেয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।
ঝরে পড়া রোধে প্রতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দিয়ে আসছে সরকার। তাতে সব মিলে সরকারের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ের একেকজন শিক্ষার্থী ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। এর ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার অনেক কমেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে সারসংক্ষেপ পাঠালে ওপেন টেন্ডার মেথড বা ওটিএম পদ্ধতিতে নগদকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী নগদকে কাজটি দিতে নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
এমআইএইচ/এমজেএফ