ঢাকা: করোনা মহামারির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন কিনতে সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীকে সফটলোনের আওতায় স্মার্টফোন কেনার জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে বুধবার (৪ নভেম্বর) অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত এক সভায় শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন কেনার জন্য সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ড. মো. আবু তাহের যুক্ত ছিলেন।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষায় আরও বেশি মনোযোগী হবে। তারা শিক্ষা জীবনের ক্ষতিও পুষিয়ে নিতে পারবে।
সভায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের গঠিত সফটলোন অনুমোদন কমিটির সুপারিশের আলোকে অনধিক ৮ হাজার টাকা শিক্ষার্থীকে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়। শিক্ষার্থীকে শুধু আসল অর্থ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কিংবা অধ্যয়নকালীন ৪টি সমান কিস্তিতে বা এককালীন তারা এ ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন।
করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি নির্ধারণ করে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইন, টিভি, বেতার এবং দূরশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।
অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ৯ আগস্ট দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্মার্টফোন কিনতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা চেয়ে উপাচার্যদের চিঠি দেয় ইউজিসি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচাই-বাছাই করে সর্বমোট ৪১ হাজার ৫০১ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা কমিশনে পাঠায়।
তালিকায় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ হাজার ৫৫৬ জন (১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ) এবং সর্বনিম্ন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৮৬০ জন (৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ)।
তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ঋণ সুবিধার বাইরে রয়েছেন।
ইউজিসির সভায় কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শাহ আলম যুক্ত ছিলেন।
সভায় কার্যপত্র উপস্থাপন করেন কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/