ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহীন সাময়িক বহিষ্কার

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২০
জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহীন সাময়িক বহিষ্কার

জাহাঙ্গীনরগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়।



অফিস আদেশে বলা হয়, গত ১৮ নভেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় তিনটি অভিযোগের ঘটনায় গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ১০ ক. (২) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালে তিনি জীবিকানির্বাহ ভাতা পাবেন।

২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে আগত মোহাম্মদ শামীম রহমান, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের উপস্থাপিকা এবং একই বছরের ২ ও ৩ ডিসেম্বর আকবর আলী ও আব্দুর রাজ্জাকের দায়েরকৃত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সিন্ডিকেট।

গত ১৬ অক্টোবর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নাহিদ নামের এক ভ্যানচালককে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পেশায় চায়ের দোকানি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জীবিকার তাগিদে ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে থাকেন নাহিদ। ওই দিন সন্ধ্যায় পণ্য পরিবহন শেষে বাসায় ফেরার পথে এক নারীর অনুরোধে তাকে ভ্যানে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগের সময় নাহিদকে আটক করেন সুদীপ্ত শাহিন। পরে নিরাপত্তা শাখার অফিসকক্ষে নিয়ে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শতাধিক শিক্ষার্থী গুগল ফরমের মাধ্যমে অনলাইনে গণস্বাক্ষর করে সুদীপ্ত শাহিনের অপসারণসহ চার দফা দাবি জানান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগের অভিযোগ তদন্তে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এছাড়া সুদীপ্ত শাহীনের নানা অপকর্ম নিয়ে ৩০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তার অপকর্মের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছিল।

ক্যাম্পাসে মাদকের কারবার ও ছিনতাইয়ে সহযোগিতা, মাদক সেবন, দর্শনার্থীদের মারধর, যৌন হয়রানি, ভ্যান ও রিকশাচালকদের মারধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করা, মাদক দিয়ে নিরীহ লোকজনকে ফাঁসিয়ে দেওয়া, নারী সংবাদকর্মীকে উত্ত্যক্ত করা, শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি- এমন নানা অভিযোগ রয়েছে সুদীপ্ত শাহিনের বিরুদ্ধে। এরপরও এসব ঘটনার কোনোটিতেই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগের একটি ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও তা সিন্ডিকেটে তোলা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।