ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

বই উৎসব পরিণত হলো আনুষ্ঠানিকতায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২১
বই উৎসব পরিণত হলো আনুষ্ঠানিকতায়

রাজশাহী: বছরের প্রথম দিন নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে কার না ভালো লাগে। চকচকে ছাপা বইরের রঙিন মোড়ক শিক্ষার্থীদের মনও রঙিন করে তোলে।

প্রতি পাতার ভাজে ভাজে যেন রহস্য। সবই জানতে হবে, শিখতে হবে। এমন আকাঙ্ক্ষায় পাগলপারা হয়ে ওঠে সব বয়সের শিক্ষার্থীরাই।

তাইতো নতুন বই হাতে পেয়ে শিশু-কিশোররা প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। কিন্তু সেই উৎসব এবার ভাটা ফেলেছে করোনা! সব উচ্ছ্বাসই পরিণত হয়েছে আনুষ্ঠানিকতায়। করোনার কারণে এবার আছে এতে বই উৎসব হয়নি আনুষ্ঠানিকতা সেরেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।

তাই কোনো উৎসব না হলেও বছরের প্রথম দিনই নতুন বই হাতে পেয়েছে রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা। তবে সব শিক্ষার্থীরা বই হাতে পায়নি। আজকে কেবল বই বিতরণ শুরু করা হয়েছে। আগামী ১২ দিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সরকারি ছুটির দিন হলেও স্বল্প পরিসরে রাজশাহীর প্রতিটি স্কুলে মুখে মাস্ক পরা নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিতরণ করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। করোনা মহামারিতে নতুন বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা খুশি। দীর্ঘ কয়েকমাস পর আজ পৌষের শীতার্ত সকালে আবারও স্কুলের পোশাক পরে নিজ স্কুলে আসে শিক্ষার্থীরা। সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে সবাই।

তবে রাজশাহী জেলায় প্রাথমিকে প্রায় ৮৬ হাজার বই এখনও পৌঁছায়নি। আর মাধ্যমিকে শুধু সপ্তম শ্রেণির ১৩টি বইয়ের মধ্যে মাত্র ৭টি বই দেওয়া হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এবছর করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে যেহেতু ১২দিনব্যাপী বই বিতরণ করা হবে। তাই এ নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন বইয়ের যে সংকট আছে, তা দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

রাজশাহীর সরকারি পিএন গালস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে আজ প্রতিবছরের মতো বই উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কেবল বই বিতরণের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে।

বছর শুরুর ১২ দিনের মধ্যেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। বিনামূল্যে বই পাওয়ার এ সুযোগ থেকে কোনো শিক্ষার্থী  বঞ্চিত হবে না। আজকে সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস ও মাস্ক পড়ে স্কুলে প্রবেশ করানো হয়। এরপর শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে নতুন শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ করা হয় বলেও জানান এই প্রধান শিক্ষিকা।  

এদিকে, রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিস জানায়, এবার জেলায় ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭৬ বই। যার মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছেছে ১৩ লাখ ৪ হাজার বই। শতাংশের হিসেবে যা ৯৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বাকি ৭ দশমিক ২ শতাংশ বই কেন্দ্র থেকে ট্রাক যোগে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে মাধ্যমিকের সবস্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ২৯৮ বই। যার মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছেছে মাত্র ১১ লাখ ২১ হাজার ২৮৬ বই। শতাংশের হিসেবে ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এখনও ৭৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ বই শিক্ষা অফিসে পৌঁছায়নি।  

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম জানান, করোনা সংক্রমণের কারণে এবার আগের মতোই ঘটা করে বই উৎসব হচ্ছে না। প্রাথমিকের জন্য কেন্দ্র থেকে বরাদ্দের অধিকাংশ বই রাজশাহীতে এসেছে। যে ৭ শতাংশ বাকি আছে তাও ট্রাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দীন বলেন, মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা বই পর্যায়ক্রমে আসছে। আশা করছি, বছর শুরুর ১২ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে বই পৌঁছে দিতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।