ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অনলাইন পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন!

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
অনলাইন পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাশেদ (ছদ্মনাম) প্রথমবারের মতো অনলাইনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অংশ নিয়েছেন।

কোর্সের আউট লাইন দেখে আগে থেকে চারটি প্রশ্নের উত্তর লিখে রাখেন তিনি।

যেখানে দুইটির উত্তর করতে হবে সেখানে প্রশ্নপত্র কমন পড়েছে একটি ও আরেকটির অর্ধেক অংশ। দুইটি ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষায় বসা এ শিক্ষার্থী শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আরেকটি প্রশ্নের অর্ধেক উত্তর নেট থেকে সংগ্রহ করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগে থেকে লিখে রাখা ও সংগ্রহ করে উত্তরপত্র সংযুক্ত করে জমা দেন।

শুধু রাশেদই নয়, নির্ধারিত সময়ে বেশি লিখতে হওয়া ও প্রযুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কতিপয় শিক্ষার্থী অনলাইন পরীক্ষায় অনৈতিক কাজ করছেন। ফলে শিক্ষকরা মূল্যায়নেও দ্বিধায় পড়েছেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

তারাও ধারণা পেয়ে যায়। প্রযুক্তিগত কিছুটা সুযোগ থাকায় কিছু শিক্ষার্থী কৌশল অবলম্বন করছেন। পরীক্ষায় চলাকালীন সময় দুই থেকে তিনটা ডিভাইস ব্যবহার, মিউট-আনমিউট করে অন্য কারো কাছ থেকে উত্তর জানা, অথবা ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ফোল্ডোরে প্রশ্নের উত্তর সেভ করে রাখাসহ বিভিন্নভাবে অনৈতিক কাজ করছেন।  

ঢাবির এক শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, অনলাইনে পরীক্ষা দিলে কী হাতে হর্স পাওয়ার যুক্ত হয়ে যায়? বাপরে বাপ প্রতি ৩ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা, প্রতি পৃষ্ঠায় ১৯ লাইন, প্রতি লাইনে ৬ শব্দ!

অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে জানতে চাইলে চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অনলাইন পরীক্ষা সহজ। কোনটা কোন ফোল্ডারে আছে জানা থাকলে হয়।

তবে এটিকে অনৈতিক মানতে নারাজ শিক্ষার্থী রাশেদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এটি একটি অনলাইনের সুযোগ। ওপেন বুক এক্সাম। কম বেশি সবাই সুযোগ নিচ্ছে।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের প্রশ্ন সৃজনশীল করতে হবে। এটি ছাড়া বিকল্প নেই। আমরা যারা কোনো ধরনের সুযোগ নিইনি তারা স্বভাবতই কম লিখতে পেরেছি। কিন্তু যারা আগে থেকে লিখে রেখেছেন তারা আমাদের চেয়ে বেশি লেখা সম্বলিত উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন। তাহলে মূল্যায়ন ত সঠিক হলো না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি ধারণা করেছি। কারণ শিক্ষার্থীদের ইংরেজি লেখায় কোন ভুল পাওয়া যায় না। প্রথম পেজের চেয়ে শেষ দিকে লেখা সুন্দর ও গোছালো হয়। নেক্সট পরীক্ষাগুলোতে আমরা অন্য পদ্ধতি প্রয়োগ করব যাতে কেউ যেন কোন সুযোগ নিতে না পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সাজেশন্স ছিল ক্রিয়েটিভ প্রশ্ন করা। যাতে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করতে পারে। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো প্রযুক্তির সুযোগ নিচ্ছেন, পরবর্তীতে প্রশ্নপদ্ধতিতে পরিবর্তন আনলে সেটি আর সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।