ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগের এক জুনিয়র কর্মীর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর জীবনের নিরাপত্তা ও ঘটনার বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন ইবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।
ভুক্তভোগীর নাম সাদরিল হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে অধ্যায়নরত। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম ফারহান লাবীব ধ্রুব। তিনি বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা রাব্বীর অনুসারী। গতকাল (২১ মে) রাত ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সাদরিল বাইসাইকেল চালিয়ে সাদ্দাম হোসেন হলের রিডিং রুমে অ্যাসাইনমেন্ট করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ধ্রুব ও ছাত্রলীগের আরেক কর্মী স্যোশাল ওয়েলফেয়ার বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রায়হান হল গেটে দাঁড়িয়েছিলেন।
সাদরিল হলে ঢোকার সময় তাদেরকে সরে দাঁড়াতে বলেন। তারা সরে না গেলে সাদরিল দুজনের কাছে এর কারণ জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদরিলকে চড় দেন ধ্রুব। এ ঘটনায় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে ধ্রুব আরও চার-পাঁচজনকে নিয়ে এসে সাদরিলকে মারধর করেন।
জানা গেছে, ধ্রুবর বিরুদ্ধে এর আগেও ক্যাম্পাসের সিনিয়রদের মারধরের অভিযোগ আছে। ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সাদ্দাম হোসেন হল মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফ ও তার বন্ধুদের মারধর করেন ধ্রুব ও তার সহযোগীরা।
একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের পেছনে ত্রিবেণী এলাকার একটি মেসে সিটে থাকা নিয়ে ধ্রুবকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময় মারামারি ঘটনায় ধ্রুবর নাম আসলেও বিচার না হওয়ায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আরও কজন সিনিয়র শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ধ্রুব অভিযোগে লিখেছেন, ঘটনার সময় তাকে ধমকানো হয়। এক পর্যায়ে গালাগাল করেন ওই সিনিয়র শিক্ষার্থী। এর কারণে জানতে চাইলে সাদরিল আরও খারাপ ব্যবহার করেন এবং তাকে হুমকি দেন। পরে ইট তুলে তাকে মারতে চান। জিয়া মোড়ে উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাদরিলকে থামিয়ে দেন। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন ধ্রুব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমার কাছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিনজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলম বলেন, প্রক্টর স্যার আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। আমিসহ প্রক্টরিয়াল বডির আরও দুজন সহকারী প্রক্টর আছেন। তাদের নিয়ে আমরা দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আগামীকাল (২৩ মে) বসবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ২২ মে, ২০২২
এমজে