ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত, কর্মবিরতিতে কলেজশিক্ষকরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত, কর্মবিরতিতে কলেজশিক্ষকরা

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গফরগাঁও সরকারি কলেজে ছাত্রলীগ কর্তৃক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা।

রোববার (১২ জুন) বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেন জেলার সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা।

ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ইউনিট পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করে।

এতে বক্তব্য রাখেন সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ও ইউনিট সভাপতি অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ মো. মাইনুদ্দিন, উপাধ্যক্ষ নুরুল আফসার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আসিফ উল্লাহ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফিরোজ আল মাহমুদ, সহযোগী অধ্যাপক উজ্জল চক্রবর্তী, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আতিকুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন কুমার ধর, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম, বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির সদস্য রাসেল আহমেদ সুমন প্রমুখ।

অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ বলেন, ময়মনসিংহের গফরগাঁও কলেজে শিক্ষক লাঞ্ছনার মতো ঘটনা সারাদেশেই কোনো না কোনো জায়গায় ঘটছে। এতে শিক্ষার কর্মপরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাতে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষক-ছাত্রের সম্পর্ক হচ্ছে অত্যন্ত আন্তরিক সম্পর্ক। সেখানে যদি দুর্বৃত্ত এসে শিক্ষককে অপমান করে, লাঞ্ছিত করে তাহলে সেখানে আর পড়ানোর পরিবেশ থাকে না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যে দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের সহকর্মীদের পাশে আছি।

অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, গত ৮ জুন ওই কলেজে সরকারি বিধি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ এবং সেশন ফি বাবদ পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। এটাকে বেশি নেওয়া হচ্ছে- এমন কাল্পনিক অভিযোগে এনে কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে মারধর ও গালিগালাজ করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কাজী ফারুক গফরগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সেটি তদন্ত করছে পুলিশ। আশা করছি দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

গফরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কাজী ফারুক জানান, গত ৮ জুন অনার্স এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা কমানোর নামে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী সিমান্ত, রিবান, মুরাদ, সাব্বির হোসেন রিয়াদ, তানভীর ও সাব্বিরসহ বেশ কয়েকজন ক্যাম্পাসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। কলেজের ক্যাশ শাখায় ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। একই সঙ্গে কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ ইমরান হোসাইন, পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ড. মো. আবু রেজোয়ান ও গণিতের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আকতার হোসেনকেও গালাগালি এবং মারধর করে। এ সময় তারা পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদেরও বের করে দেয়। এ ঘটনার বিচার দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ১২ জুন, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।