ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির আইনি ভিত্তি নেই, ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২
আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির আইনি ভিত্তি নেই, ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ 

ঢাকা: আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির কার্যক্রমের আইনি কোন ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি এ পরামর্শ দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউজিসি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমে দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে বলে অভিমত ইউজিসির।

এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন এবং সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য আইনের ধারা ৯ এর শর্তসমূহ পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমে আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এজন্য জনস্বার্থে শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করেনি এবং সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য আইনের ধারা ৯ এর শর্তসমূহ পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে।

অভিভাবকহীন এ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রফেসর বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০০৬ সালের পর থেকে চ্যান্সেলর বা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত কোন ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। অর্থ্যাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোন কর্তৃপক্ষ নেই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এসব একাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ১৭ এবং ১৯ অনুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোন বৈধতা নেই।

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ১৯ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমতি পায়। সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্তাবলী প্রতিপালন ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে ব্যর্থ হওয়ায় ২০০৬ সালে সরকার আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন দায়ের করে স্থগিতাদেশ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের দাবিদার তিনটি পক্ষ বিভিন্ন ঠিকানায় বেআইনিভাবে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইউজিসির তদন্ত কমিটির মতে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কখনোই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্থক নয়। বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ১৪(১) ধারা অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণিত নয়টি কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ। অথচ আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির তিনটি গ্রুপ বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্থক বানিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির এসব কার্যক্রমে দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে।

এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১২(১) ধারায় ‘কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে, অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯ এর কোন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, ওই সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২২
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।