ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে লোক ২০ হাজার, অ্যাম্বুলেন্স একটি!

মহিউদ্দিন রিফাত, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে লোক ২০ হাজার, অ্যাম্বুলেন্স একটি!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ রয়েছেন। অথচ প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব মেডিকেল সেন্টারে নেই কোনো উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা।

আশপাশের মেডিকেলে রোগী আনা-নেওয়া করতে তাদের ভরসা একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স! এ নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ, সেবা না পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ১৭ হাজার ৩৮ জন। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। প্রায় ২০ হাজার মানুষের একটি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা ও প্রয়োজন মাফিক অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় উঠেছে প্রশ্ন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চিকিৎসা সেবা মান নেই তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সেবাও মেলে না ঠিক ভাবে।

ছাত্রীদের জন্য জবির একমাত্র আবাস্থল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। এ হলে বসবাস করেন ১ হাজার ২০০ ছাত্রী। যদি কোনো রাতে তাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন, অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যায় না। অতীতে নাকি এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নেই ছাত্রদের জন্য কোনো আবাসিক হল। তাই পুরান ঢাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা। অসুস্থ হলে তারাও বঞ্চিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে।

ছাত্র বা ছাত্রী সব শিক্ষার্থীদেরই এ অব্যবস্থাপনা নিয়ে আছে অভিযোগ। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে একসঙ্গে কয়েকজন অসুস্থ হতেই পারেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স একটি হওয়ায় সবাই এর সেবা পান না। ফলে সেবার মান উন্নয়নের জন্য একাধিক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থার দাবি করেন তারা।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক আবাসিক ছাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, আমার রুমমেট একদিন রাত ৩টার দিকে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় হল প্রভোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স চাওয়া হয়। ঘণ্টা-খানেক অপেক্ষা করার পরও অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাকে রিকশায় মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারত। সে দায় কার হতো, জানতে চান তিনি।

পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় বসবাস করেন জবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মুরাদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মাস-খানেক আগে হঠাৎ আমার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আমার রুমমেটরা প্রথমে চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স আনার। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়ে পরে রিকশাতেই মেডিকেলে নিয়ে যান

ছাত্র-ছাত্রীদের এমন অভিযোগ অনেক রয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান চেয়ে না মেলায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বিষয়টি নিয়ে। কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা মান নিয়ে উদাসীন কিনা, রয়েছে সে প্রশ্নও।

এ বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের উপপ্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আমরা আবেদন করেছি। এখন একটি দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় একদিনে একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তখন সমস্যায় পড়তে হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্স না থাকলে অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স কেনার ক্ষেত্রে বাজেটের একটা বিষয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় কমিটিসহ আনুষঙ্গিক আরও কিছু কমিটি আছে অ্যাম্বুলেন্স কেনার বিষয়েও তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়। সামনে বাজেট এলে নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার চেষ্টা করবেন বলেও তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।