সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত বৈঠকটি কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ করেছে সংস্থাটি। সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।
তাই প্রবাসী বাংলাদেশি দুই কোটি হলেও অবৈধ কতজন তা জানা না থাকায় যথার্থ প্রস্তুতিও নেওয়া সম্ভব নয়। আবার অবৈধ অভিবাসীদের এ কার্যক্রমের আওতায় আনতে গেলে, তারা সংশ্লিষ্ট দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটকও হতে পারেন। এক্ষেত্রে তাদের ক্ষতির মুখে পড়ারও সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈঠকে নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র জানান, আপাতত সিঙ্গাপুর ছাড়া আর কোনো দেশে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালানো হবে না। কেননা, সিঙ্গাপুরে অবৈধ অভিবাসী নেই, এটা প্রায় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে সিঙ্গাপুরের পাইলটিংয়ের পর আগামী জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই করার কথা রয়েছে। সে সময় দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসবে নির্বাচন কমিশন। সেখানে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশি কমিউনিটি ও দূতাবাসের সঙ্গেই বৈঠক করবে ইসি। হয়তো সে বৈঠক থেকেই আসতে পারে কোনো দিকনির্দেশনা।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক হাজার নাগরিককে প্রথমে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার পর, দেশটিতে ব্যাপক আকারে কার্যক্রম হাতে নেওয়ার প্রক্রিয়ার দিকেই এগোনো হচ্ছে। অন্য দেশগুলোতে যাওয়া হয়তো এ বছর সম্ভব নাও হতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন খুব গুরুত্বের সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন দেশের জেলে গিয়ে যেটা দেখেছি, বাংলাদেশর অভিবাসীরাই বেশি। মধ্যপ্রাচ্যের একটি জেলে গিয়ে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি পেয়েছি। কাজেই বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবৈধ অভিবাসীদের কীভাবে এর আওতায় আনা যায়, সেটিও ভাবা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দালালরা ওমরা ভিসায় সৌদি আবর, পর্যটক ভিসায় বিভিন্ন দেশে নিয়ে গিয়ে অশিক্ষিত, সহজ-সরল লোকদের ঝামেলায় ফেলেছে। এটা মর্মাহত হওয়ার মতো একটা বিষয়।
এ বিষয়ে ইসির এনআইডি শাখার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বেশ কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, পুরো কর্মপন্থাটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের একটি করে লোকাল সার্ভার স্থাপন করা হবে। সেই সার্ভারের অধীনে কয়েকটি টেম্পরারি সার্ভার স্থাপন করা হবে। লোকাল সার্ভারের সঙ্গে টেম্পরারি সার্ভারের সংযোগ থাকবে। আর টেম্পরারি সার্ভারের মাধ্যমেই ইনপুট দেওয়া হবে নাগরিকদের তথ্য।
বিদেশ থেকে সেই তথ্য দেশে এনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলায় পাঠানো হবে। সেই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাঠাবেন। প্রতিবেদনে সত্যতা মিললেই কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট দেশেই দূতাবাসের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে এনআইডি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর ২০১৮ সালে এ উদ্যোগ হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর কয়েক দফায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠক করে সিঙ্গাপুরকেই প্রথম হিসেবে বেছে নেয় ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৯
ইইউডি/এএ