ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

এনআইডি কার্যক্রম না ছেড়ে দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরবে ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৩ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২১
এনআইডি কার্যক্রম না ছেড়ে দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরবে ইসি

ঢাকা: জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রম অন্য বিভাগের কাছে ন্যস্ত না করার পক্ষে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আইনি জটিলতা, অবকাঠামোগত অসুবিধা, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটদান, সাংবিধানিক সংকট প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরা হবে বলে জানা যায়।

১৭ মে-তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রস্তাবনার ভিত্তিতে গত ২৪ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে লোকবলসহ এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।

ইসি সূত্রগুলো জানায়, এনআইডি কার্যক্রম কেন অন্য কোনো বিভাগ বা সংস্থার হাতে যাওয়া উচিত নয়, তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি খসড়া মতামত তৈরি করেছে কমিশন সচিবালয়। অনুমোদনের পর চলতি সপ্তাহেই এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পাঠানো হতে পারে।

কমিশনের যুক্তি এনআইডি ভোটার তালিকার একটি বাই প্রোডাক্ট। এজন্য আলাদা কোনো লোকবল নেই। নেই অবকাঠামো।

ইসির মাঠ পর্যায়ের নিজস্ব কার্যালয়, সার্ভার ও প্রায় পাঁচ হাজার লোকবল দ্বারা প্রথমে ছবি, দশ আঙুলে ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নিয়ে ভোটার তালিকা করা হয়। পরবর্তীসময়ে সেই তথ্য ভোটার তথ্য ভাণ্ডারে সংরক্ষণ হয়। আর জাতীয় পরিচয় প্রিন্ট করা হয় সেই তথ্য ভাণ্ডার থেকেই।

বর্তমানে ভোটদান পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে, যে পদ্ধতির একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হচ্ছে এনআইডির ভিত্তিতে ভোটার চিহ্নিতকরণ।

এছাড়া এনআইডি মিরর সার্ভার নিয়ে যদি আলাদাভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, সেক্ষেত্রে ইভিএমে ভোটদানে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে পুরো এনআইডি আলাদা করা হলে নতুন করে আলাদা সার্ভার, লোকবলের প্রয়োজন। যে জন্য রাষ্ট্রের একটি বিরাট অর্থের অপচয় হবে।

এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, এনআইডি অন্য কারো কাছে গেলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে। তাই এনআইডি ইসির হাতেই থাকা উচিত।

এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবও পুনরায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ২০০৭ সালে নির্বাচন কমিশন একটি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই সংস্থাটি নাগরিকদের একটি পরিচয়পত্রও দেয়। পরবর্তীসময়ে এনআইডি অনুবিভাগ তৈরি করে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় স্মার্টকার্ড প্রকল্পও হাতে নেয়। এজন্য আইন ও বিধি প্রণয়ন করে বর্তমানে ভোটার তালিকার ভিত্তিতে দেশের সব নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ করে আসছে ইসি। সংস্থাটির তথ্য ভাণ্ডারে প্রায় ১১ কোটি ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য রয়েছে।

এই তথ্যভাণ্ডারের মাধ্যমে ব্যাংক-বিমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ১৪০ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে পরিচিতি যাচাই করে দিচ্ছে ইসি। আর এ থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে সংস্থাটি।

কমিশন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় ১৪ বছর ধরে এ কাজের সঙ্গে জড়িত। চাকরি জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় ব্যয় করেছেন এর পেছনে। তারা কোনোভাবেই এটি অন্য দফতরের হাতে দিতে চান না।

নির্বাচন কমিশন ৫ শতাধিক থানা নির্বাচন অফিস, ৬৪ জেলা নির্বাচন অফিস, ১০ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে সার্ভার বসিয়ে এনআইডি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

আরও পড়ুন>  ইসিকে এনআইডি কার্যক্রম ছেড়ে দিতে বলল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

বাংলাদেশ সময়: ০৭২১ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২১
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।