ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

পেছাতে পারে জেলা পরিষদ নির্বাচন

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২১
পেছাতে পারে জেলা পরিষদ নির্বাচন

ঢাকা: আগামী জানুয়ারিতে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বর্তমান কমিশনের অধীনে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনটি না হওয়ারও সম্ভবনা রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সব নির্বাচন সম্পন্ন করে যেতে চায়। কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর শেষ হবে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এক্ষেত্রে জানুয়ারিতে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। কিন্তু জানুয়ারিতে না হলে ফেব্রুয়ারিতেও এ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার গত ২৯ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে সব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। জানুয়ারির দিকে অনুষ্ঠিত হবে জেলা পরিষদ নির্বাচন।

ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় পরিষদের জনপ্রতিনিধিরাই জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। ফলে এ ভোটগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে গেলে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে। যে কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জানুয়ারি মাসে এর ভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে। এরপর প্রথমবারের মতো স্থানীয় এ সরকারে নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সে সময় ৬১টি জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচন হয়েছিল। এরমধ্যে ১৯টি জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদগুলোতে নির্বাচনে সময় গণনা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচন শেষ না হলে জেলা পরিষদ নির্বাচন করা যাবে না। কেননা জেলার অধীনে যতগুলোর স্থানীয় সরকার রয়েছে, সেগুলোর সদস্যরাই ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের সদস্যদের নির্বাচিত করে থাকেন। অর্থাৎ সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র এবং কাউন্সিলররা বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করেন।

বর্তমানে উপজেলার সব নির্বাচন শেষ হয়েছে। পৌরসভার ভোটও শেষের পথে। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অর্ধেকও শেষ করতে পারেনি।

প্রথম ধাপে ৩৬৯টি ইউপির ভোট সম্পন্ন করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৬টি ইউপিতে ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ভোট হবে এক হাজার সাতটি ইউপিতে।

কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারিতে জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে চাইলে আরও প্রায় দুই হাজারের মতো ইউপিতে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ করতে হবে। এছাড়া রয়েছে সিটি করপোরেশন নির্বাচনও। যার জন্য পর্যাপ্ত সময় বের করা কঠিন। তাই সব নির্বাচন ডিসেম্বরে শেষ না হলে জানুয়ারিতে জেলা পরিষদ হবে না।

এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব মো. ফরহাদ আহাম্মদ খান বলেন, স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচন শেষ না হলে জেলা পরিষদ নির্বাচন জানুয়ারিতে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে সব নির্বাচন শেষ করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২১
ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।