ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

সামাজিক অনুষ্ঠানেও নজরদারিতে প্রার্থীরা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
সামাজিক অনুষ্ঠানেও নজরদারিতে প্রার্থীরা

ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে সামাজিক, ধর্মীয়সহ যে কোনো প্রকার অনুষ্ঠানে নজরদারিতে আসছেন প্রার্থীরা। তারা যাতে কোনো প্রকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করতে না পারেন, এজন্যই এমন ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।


 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি চিঠি এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করেছে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা। আগামী দু’একদিনের মধ্যেই তা পাঠানো হবে।
 
প্রার্থীদের প্রচারণার বিষয়টি নজরদারিতে রাখার বিষয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে- পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক অনুষ্ঠান, কর্মীসভা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা অন্য যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন প্রার্থীরা। কিন্তু এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তারা প্রচারণা চালানোর নামে- চাঁদা, অনুদান ইত্যাদি দিচ্ছেন বা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। যা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের অন্তরায়। এসব না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এছাড়াও বহিরাগতদের নিষিদ্ধকরণ, বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বিরতীকরণসহ অন্তত ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। যার মধ্যে অন্যতম-
 
বহিরাগত:
নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগতরা অবস্থান করে যেন কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি না করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে আগামী ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত ১২টার আগেই সব বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়তে হবে। এর জন্য মাইকিং করে সবাইকে জানানোর ব্যবস্থা নেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
 
বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন:
নির্বাচনের একদিন আগে থেকে পরের দিন পর্যন্ত অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ পর্যন্ত মোট ৩ (তিন) দিন কোনো ব্যক্তিই তার বৈধ অস্ত্রও প্রদর্শন করতে পারবেন না।
 
অনিয়মনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা:
যে কোনো ধরনের নির্বাচনী অনিয়মের জন্য তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারবেন।
 
দোষী কর্মকর্তাকে শাস্তি:
এদিকে, নির্বাচনী কাজে দায়িত্বরত যে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের কোনো অভিযোগ আসলে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তও দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেই তাকে অব্যাহতি দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
 
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় টহল:
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিতে গমনের সুবিধার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিবিড় টহলের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনের দু’দিন আগে অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ভোটার এলাকাগুলোতে টহল দেবে।
 
এছাড়া ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প করতে না দেওয়া এবং ভোটকেন্দ্রে প্রবেশযোগ্য ব্যক্তির তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও দিয়েছে ইসি।
 
আবার ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী উপকরণ পৌঁছানো, ভোটগ্রহণ শেষে দ্রুতগতিতে পৌঁছানোর জন্য কড়া নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশও দিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
 
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব সামসুল আলাম বাংলানিউজকে বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য প্রার্থীদের ইসির নির্দেশনা জানিয়ে দেবেন। তারাও বেশ কিছু বিষয়ে অ্যাকশন নেবেন। এছাড়া প্রার্থীরা সে সিদ্ধান্ত মানছেন কিনা তাও নজরদারি করে দেখা হবে। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা বাহিনীর প্রতিবেদন নেবে ইসি।
 
এর আগে, যে কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রচারণা না চালানো কিংবা মন্ত্রী-এমপিসহ অন্যান্য অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো প্রচারণা না চালাতে প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছিল ইসি।
 
আগামী ৩০ ডিসেম্বর (বুধবার) দেশের ২৩৪ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মেয়র পদে ৯২৩ এবং কাউন্সিলর পদে ১১ হাজার ১২২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যাদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রায় ৭২ লাখ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এ নির্বাচনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।