ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

শিবগঞ্জ থেকে মাজেদুল নয়ন

আবেগী প্রার্থী জাপা'র লিটিলের কথা

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
আবেগী প্রার্থী জাপা'র লিটিলের কথা ছবি: দিপু মালাকার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: কবে থেকে জাতীয় পার্টির সমর্থক? তোফায়েল আহমেদ লিটিল উত্তর দিলেন, 'ভালো লাগা থেকে হয় ভালোবাসা। যখন থেকে ভালোবাসতে শুরু করি, তখন থেকেই প্রেম, দুর্বলতা।



এ রকম কথার মাঝখান থেকেই উত্তর খুঁজে নিতে হবে শিবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী লিটিলের।

দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন তিনি। গত কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট প্রাপ্তির সংখ্যা তার ২শ’ পেরোয়নি।

‘তবে এবার চারদিকে হই-চই পড়ে গেছে, আমাকে সবাই ভোট দেবে, সবাই বলছে ডাক্তার সাহেব ভালো, তাকেই আমাদের প্রয়োজন’- বললেন লিটিল।

শিবগঞ্জে মেয়র বা ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের বিপরীতে জাতীয় পার্টির একমাত্র প্রার্থী লিটিল। তবে দলটির কোনো সমর্থন নেই।

ফের দলের কথা উঠতেই তিনি কেঁদে দিলেন রাস্তার মধ্যেই। লিটিল বললেন, 'মিটিং শেষের আগেই তারা ছয়জন উঠে চলে গেলেন। কী তাদের কথা, কেন এমন করলেন, বুঝলাম না। সবাই তো এক ছিলাম। শুধু বললো, লিটিল তোমাকে সোনা মসজিদ পৌঁছাতে হবে’।

এ কথার শানে নযুল হচ্ছে- নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জেলা জাতীয় পার্টির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই শেষ হয়। তবে সিনিয়র একজন বলেছিলেন, ‘তাকে (লিটিল) জয়ী দেখতে চান। ’

নির্বাচনী প্রচারণায় নিজের কৌশল সম্পর্কে কাউন্সিলর প্রার্থী লিটিল বলেন, ‘আগের বার বুঝিনি, এবার বুঝেছি। যে বাসায় ভোট চাইতে যাই। সে বাসার ভোটার সম্পর্কে ধারণা নিই। তারপর কৌশল নির্ধারণ এবং অ্যাকশন। প্রয়োজনে ভোটারের পায়ে ধরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। ’

এরই মধ্যে কয়েকজন পুরুষ ভোটারকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে ভোট প্রার্থনা করেছেন লিটিল। তিনি বলেন, ‘আমি কান্না সামলাতে পারি না। জনগণের জন্য কাজ করতে পারলে ভারমুক্ত হবো। ’
Little_japa_3
এরপর আরেক বাসায় ঢোকার আগে হাঁটার গতি ধীর হয়ে গেল। বোঝা যায়, স্ট্র্যাটেজি ঠিক করছেন তিনি। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তারপর বৃদ্ধা ভোটারের পা ধরে সোজা লুটিয়ে পড়লেন। ‘মাগো আমি তোমার অবাধ্য সন্তান। নিজ গুণে ক্ষমা করে ভোট দিও। আমি গুণাহগার, মাফ করে দিও’।

পানির বোতল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লিটিল। দলের সহযোগিতা কেমন পাচ্ছেন? এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটা কানাকড়ি সাহায্য তো দূরের কথা, মানসিকভাবেও কোনো সাহায্য নাই। আমি জয়ী হয়ে লিডার এরশাদের কাছে যাবো। বলবো- লিটিল জয়ী হয়েছে, পবিত্র মায়ের ভালোবাসা নিয়ে। ’

তিনি জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। এজন্য মা আদর করে নাম রেখেছেন- 'লিটিল'।

লিটিল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্যাম্পেইন করে বেড়াচ্ছেন দুই ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে। তাই তার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার চেম্বারটিতে বসার সুযোগ পাচ্ছেন না।

৪নং ওয়ার্ডে যে ক্যাম্প অফিস করেছেন, সেখানে এখনো বিদ্যুত সংযোগ হয়নি। তারপরও অন্যরকম এক নির্বাচনী উত্তেজনা নিয়ে মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে অন্ধকারেই বসে ছিলেন লিটিল।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এমএন/টিআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।