ফতুল্লা থেকে: ‘ভোট আমার আমানত। আমানত নষ্ট করবো কেন? জাহেরি (দৃশ্যমান) চোখ দিয়ে না দেখলেও বাতেনি (অদৃশ্য) চোখ দিয়ে দেখে ভোট দিয়েছি।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের হাজীপান্দে আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে কথাগুলো বলছে অন্ধ ভোটার মো. শাহজাহান।
২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফা ইউনিয়ন নির্বাচনে ফতুল্লার কুতুবপুর, কাশিপুর, এনায়েতনগর ও বক্তাবলী ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্ত্রী মরিয়ম বেগমের কাঁধে ভর করে ভোট দিতে এসেছেন মো. শাহজাহান। আনসার-ভিডিপি সদস্য আবদুল আজিজের সহায়তায় তিনি ভোট দিয়েছেন।
ষাটোর্ধ্ব আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, এবার নিয়ে দু’বার ইউপি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছি। এবার একজন পুলিশ ও এক আনসার সদস্য খুবই সহায়তা করেছে।
লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। আমি যে যে মার্কায় বলেছি তারা সে মার্কায় আমার টিপ দিয়েছে। জাহেরি নয় বাতেনি চোখ দিয়ে দেখেছি যে ঠিক জায়গায় ভোট পড়েছে, বলেন শাহজাহান।
আনসার সদস্য আব্দুল আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, মো. শাহজাহান যে মার্কায় বলেছেন সে মার্কায় আমরা টিপ নিয়েছি। তার মতো বেশ কয়েকজন অন্ধ এভাবে ভোট দিয়েছেন।
ভূঁইগড় দারুচ্ছুন্নাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে নাতি আক্তার হোসেনের কাঁধে ভর করে ভোট দিতে আসেন ৮০ বছর বয়সী শব্বির উদ্দিন। ভোট দিতে সহায়তার হাত বাড়ালেন আনসার পিসি আমিনুল ইসলাম।
শব্বির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, চোখে একেবারেই দেখি না। ভাবলাম, কয় কাল বাঁচবো। আমার ভোটের জন্য হয়তো একজন প্রার্থী হেরে যাবে।
তিনি বলেন, এখন তো সৎ মানুষের আকাল। একজন সৎ মানুষ পেয়েছি যাকে ভোট দিলাম। ভোটে সহায়তা পেয়ে কমিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইলো।
দেলপাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ষাটোর্ধ্ব মোস্তফা হাজারী বাংলানিউজকে জানান, চোখ অন্ধ, কিন্তু মন তো অন্ধ না। আত্মতৃপ্তির জন্য ভোট দিতে আসলাম।
এছাড়া আরো কয়েকটি কেন্দ্রে বয়স্ক, অন্ধ পুরুষ ও নারী ভোটারদের আসতে দেখা গেছে।
**‘ভোটের আনন্দে রোদ কোনো সমস্যা না’
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
আরইউ/জেডএস