ঢাকাই সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত কবরীর পরেই শাবনূরকে ‘ভার্সেটাইল মহানায়িকা’ বলেই অভিহীত করলেন শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোরশেদ কনকচাঁপা। সামাজিকমাধ্যমে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী শাবনূরের জন্মদিন। এই দিনেও হাজারও ভক্ত অনুরাগী থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই শাবনূরকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন।
শাবনূরের বেশির ভাগ সিনেমার গানেই কনকচাঁপার কণ্ঠ সম্মোহিত করেছে শ্রোতাদর্শকদের। এখনও করে যাচ্ছে।
নায়িকার জন্মদিনে কনকচাঁপার লেখেন, শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময় শিল্পীর নাম। যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না! তার অভিনয় শৈলী, তার উচ্চারণ, তার দৈহিক সৌন্দর্য, তার চাঁদপানা মুখশ্রী গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ। তার রেশ এখনো কাটেনি, কাটবেও না কখনও। এই ‘শাবনূর’ এপিসোড থেকে দর্শক বেরুতেও চায়নি, চাইবেও না। কারণ এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।
শাবনূরের সিনেমার গান গাওয়ার প্রসঙ্গে এই কণ্ঠশিল্পী লেখেন, আমি বলা যায় প্রথম থেকেই তার জন্য গাইছি। আশ্চর্যজনক কথা যে তার সঙ্গে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। আমি আমার মতো গেয়েছি তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন। কিন্তু যখন পিকচারাইজেশন দেখেছি তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে এটা আমি গেয়েছি, মনে হয়েছে এটা যেন তারই কণ্ঠ! এই যে একাকার হয়ে যাওয়া এই ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই।
শাবনূরের প্রশংসা করে এই গায়িকা লেখেন, তিনি আসলে আমাদের কবরীর পরে ভার্সেটাইল যাকে বলে সেই উঁচুমানের মহানায়িকা। সিরিয়াস অভিনয়, হাসির অভিনয়, ছটফটে দুরন্ত কিশোরীর অভিনয় সবই দুর্দান্ত তবে তার ভয়ংকর সুন্দর চোখে যখন অশ্রু ঝরে তখন একটা কথাই মাথায় আসে ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেবো ভেবে হই আকুল’!
শাবনূরের রূপের প্রশংসায় কনকচাঁপা লেখেন, আগেই বলেছি ব্যক্তিগত জীবনে তার সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয়েছে। আমার রেকর্ডিং স্টুডিও আর তার কর্মক্ষেত্র আলাদা জায়গায় হওয়াতেই এমন হয়েছে। কিন্তু যখন তাকে দেখেছি, খেয়াল করেছি খুব সহজ সরল তার উপস্থিতি। তার কাঁচভাঙ্গা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধহয় এভাবে অনুভব হয়। সাধারণ ভাবে দেখা সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কীভাবে! আমার ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে গিয়েছিলাম তার বাসায়। তখন তার আন্তরিক আতিথিয়েতা দেখে আমি মুগ্ধ! তখনও আমি নিরাভরণ শাবনূরকে দেখে চমকে উঠেছি তার বিরল সৌন্দর্য ও চোখের চাহনিতে।
আমাদের দুই দেহ এক প্রাণ বলা যায়- উল্লেখ করে এই গায়িকা লেখেন, আমি খুবই গর্বিত তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময়ই আমি সঙ্গে ছিলাম। তার অভিনীত একশো ভাগের নিরানব্বই ভাগ গানই আমার গাওয়া। আমাদের দুই দেহ এক প্রাণ বলা যায়।
কিছুটা আক্ষেপের সুরও পাওয়া গেল কনকচাঁপার লেখনিতে। তিনি লেখেন, জীবনে কখনো কোন চ্যানেলকে বলিনি আমাকে এমন একটা অনুষ্ঠান দেন। কিন্তু কয়েকটি চ্যানেলে স্বপ্রনোদিত হয়ে বলেছি শাবনূর ও আমাকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম সাজাতে। কিন্তু কোন চ্যানেলই গা করে নাই। এই বাংলাদেশে মূল্যায়ন পাওয়া খুবই কঠিন তবে আমার বিশ্বাস একদিন আমার গান আর শাবনূরের অভিনয়ের সমন্বয় নিয়ে গবেষণা হবে তখন হয়তো তা দেখার জন্য হয়তো কোন একজন থাকবো না।
জন্মদিনে শাবনূরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সবশেষ কনকচাঁপা লেখেন, আমি আমাদের এই মহানায়িকার আনন্দিত সুখী সুদীর্ঘ জীবন কামনা করছি। শাবনূরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার পক্ষ থেকে রইলো অগণন শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এনএটি