জীবনের আরেকটি বসন্ত পার করলেন ঢাকাই সিনেমার জীবন্ত কিংবদন্তি শাবানা। শনিবার (১৫ জুন) গুণী এই অভিনেত্রীর ৭২তম জন্মদিন।
১৯৬২ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। এরপর রত্না নামে সেই কিশোরী অভিনেত্রী হিসেবে ‘তালাশ’, ‘কবাবু’, ‘ভাইয়া’, ‘সাগর’, ‘পঁয়সে’, ‘আবার বনবাসে রূপবান’ সিনেমায় অভিনয় করেন। সহনায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন ‘আবার বনবাসে রূপবান’ ও ‘ডাক বাবু’তে।
এহতেশাম ছিলেন শাবানার চাচা (বাবার খালাতো ভাই)। তার হাত ধরেই ১৯৬৭ সালে ‘চকোরী’তে নাদিমের বিপরীতে নায়িকা হওয়ার সুযোগ পান এই কিংবদন্তি। এই সিনেমার মাধ্যমেই সবাই তাকে শাবানা নামে চিনতে শুরু করেন। সিনেমাটি বেশ ব্যবসাসফল হলে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
তিন দশকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাবানা। এর মধ্যে ১৩০টি সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন আলমগীর। এছাড়াও রাজ্জাক, জসিম, সোহেল রানা, ফারুকসহ বেশ কয়েকজন গুণী অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে উপহার দিয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা।
শাবানা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘ভাত দে’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘রাঙা ভাবী’, ‘অবুঝ মন’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘বিরোধ’, ‘আনাড়ি’, ‘সমাধান’, ‘জীবনসাথী’, ‘মাটির ঘর’, ‘লুটেরা’, ‘সখি তুমি কার’, ‘কেউ কারো নয়’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘দুঃসাহস’, ‘পুত্রবধূ’, ‘আক্রোশ’ ও ‘চাঁপা ডাঙার বউ’ প্রভৃতি।
১৯৮০ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সখি তুমি কার’ সিনেমার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবানা। এরপর অভিনয়ে অসামান্য অবদানের জন্য মোট নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। এছাড়া বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি ও কথক একাডেমি’সহ আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। তাদের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এস এস প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৯ সালে। ওই বছর প্রথম সিনেমা নির্মাণ করেন ‘মাটির ঘর’। এটি পরিচালনা করেন প্রয়াত আজিজুর রহমান। এরপর একে একে ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘আমি সেই মেয়ে’, ‘স্বামী কেন আসামি’সহ স্থানীয় ও যৌথ প্রযোজনায় প্রায় দুই ডজন সিনেমা নির্মাণ করেন তারা। যার বেশিরভাগই ব্যবসা সফল।
১৯৯৭ সালে শাবানা হঠাৎ চলচ্চিত্র থেকে বিদায় দেন। ২০০০ সালে সপরিবারে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। শাবানা-সাদিক দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তারা হলেন- সুমি, উর্মি ও নাহিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
এনএটি