ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২৪
সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে তারা

ঢাকা: বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) এ ধ্বংসযজ্ঞ কেন, এর পেছনে কারা?- সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান শিল্পীরা। পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন সেন্টারে (বিটিভি)তে ‘সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা’- এই স্লোগান ব্যানারে ধারণ করে বিটিভি প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে মতপ্রকাশ করেন শিল্পীরা।

এ সময় ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আমি দেখেছি, ছাত্ররা যে কোটার আন্দোলনে নেমেছিল সেই কোটার পক্ষে আমরা সকলেই ছিলাম, কিন্তু আন্দোলনে এই ছাত্রদেরকে ঢাল করে একদল মানুষরূপী পশু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছারখার করে দিয়েছে আমাদের এ দেশটিকে। দেশটি হয়তো আবার আমরা কষ্ট করে ঠিক করে ফেলবো কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলো আর আমরা আর কোনোদিন ফিরে পাবো না।  

ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আজকে আমরা বিটিভিতে এসেছি। আমাদের সংস্কৃতির অস্তিত্বের একটি জায়গা এটি। সে বিটিভিতে আগুন কেন? এ অগ্নিসন্ত্রাসী কারা? তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে, চিহ্নিত করতে হবে। যতগুলো প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, আপনারা যদি দেখেন, বাচ্চারা যদি দেখে বুঝতে পারবেন সুপরিকল্পিতভাবে এসব করা হয়েছে। তাদের বিচার চাই। আজ আমরা সকল অঙ্গনের শিল্পীরা এখানে একত্রিত হয়েছি, আমাদের সংহতি প্রকাশ করার জন্য। সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা।

রূপবান কন্যা খ্যাত অভিনেত্রী সুজাতা বলনে, সন্ত্রাসীরা এখনো ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে, তাদেরকে খুঁজে বের করে বিচার হোক। আমরা শিল্পীরা যেন ঐক্যবদ্ধ হই এবং যেন তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। যখন দেশটা উন্নতির দিকে তখনই শত্রুরা আঘাত হানে, ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করে দেয় দেশকে। আমরা শিল্পীরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছিলাম, আছি, থাকবো। দেশজুড়ে জ্বালাও, পুড়াও এ সন্ত্রাস আমরা চাই না, আমরা মানি না।

অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেন, আজকে আমরা ব্যথিত, ক্ষুব্ধ, মর্মহত। কারণ যে বাংলাদেশ টিলিভিশন বাঙালির সংস্কৃতির ধারক ও বাহক, বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেছে- সেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে এসে এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মর্মাহত হয়েছি। এখানে আমরা বেড়ে উঠেছি, শিল্পী হিসেবে এই প্রাঙ্গনে বড় হয়েছি। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদের সকলের আমরা বিচার চাই। বাংলাদেশে এরকম নৃশংসতাা, এমন ধ্বংসযজ্ঞ, এতো প্রাণহানী আমরা আর চাই না।

অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে ব্যহত করার জন্য একটি রাজনৈতিক দল সব সময় থাকে। এই গণতান্ত্রিক দেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা সকলকে তার অধিকারের কথা বলতে, দাবির কথা বলতে সুযোগ দিয়েছেন। এই ছাত্রদের আন্দোলনকে ঘিরে জঙ্গি হিসেবে, দুঃস্কৃতিকারী হিসেবে যারা সহিংসতার রাজনীতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চাই।  

অভিনেতা আজিজুল হাকিম বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনে যে নৃশংস হামলা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমি এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই। সেইসঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকন্ডে যে সকল প্রাণ আমরা হারিয়েছি, তাদের সকলের বিদেহী আত্মার প্রতি আমি সমবেদনা জানাই, আত্মার শান্তি কামনা করি। আমরা সুন্দর বাংলাদেশ চাই, সম্প্রতির বাংলাদেশ চাই, স্বস্তির বাংলাদেশ চাই, সন্ত্রাসের বাংলাদেশ চাই না। সবাই মিলে আসুন, দেশটাকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। আর সন্ত্রাস আমাদের কাম্য নয়।

সংগীত শিল্পী শুভ্র দেব বলেন, এই বিটিভি ছিল বাংলাদেশের প্রখ্যাত সব শিল্পীদের পদচারণামুখর একটি পবিত্র জায়গা। আমি বিশ্বাস করি, কোনো বাংলাদেশী এই বিটিভিতে আক্রমণ করতে পারে না, আক্রমণ করতে পারে কোনো টিক্কাখানের বংশধর। প্রত্যেকটা শিল্পীর হৃদয়ে যে ক্ষরণ হয়েছে, যে ক্ষত হয়েছে তা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।  

এছাড়াও সহিংসতার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, হৃদি হক, সোহানা সাবা, সাজু খাদেম, অরুণা বিশ্বাস, নিপূণ আক্তার সহ উপস্থিত অনেক তারকাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২৪
ইএসএস/এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।