ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

গাব্বার হতে চেয়েছিলেন অমিতাভ

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫
গাব্বার হতে চেয়েছিলেন অমিতাভ আমজাদ খান ও অমিতাভ বচ্চন

‘কিতনে আদমি থে?’, ‘তেরা কেয়া হোগা কালিয়া?’, ‘ইয়ে হাত হামকো দে দে ঠাকুর’, ‘জব বাচ্চা রাত কো রোতা হ্যায় মা কেহতি হ্যায় বেটা সো জা, সো জা নাহি তো গাব্বার সিং আ জায়েগা’- এসব সংলাপ শোনা গেছে গাব্বার সিংয়ের মুখে, ‘শোলে’ ছবিতে। নির্দয়, অনুতাপ আর বিবেকহীন হলেও তিনিই হয়ে ওঠেন দর্শকের প্রিয়।

এটা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন অমিতাভ বচ্চন! তাই গাব্বার ডাকাত হতে চেয়েছিলেন তিনি। ‘শোলে’র চার দশক পূর্তি উপলক্ষে অজানা তথ্যটি জানালেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ১৫ অাগস্ট মুক্তি পায় ‘শোলে’। আজ (১৫ আগস্ট) পূর্ণ হলো ছবিটির ৪০ বছর। চার দশক পরেও গাব্বারের জনপ্রিয়তা একই রকম। এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত আমজাদ খান। অমিতাভকে জয় আর ধর্মেন্দ্রকে দেখা গেছে বীরু চরিত্রে।  

গালভর্তি দাড়ি। সেনাদের মতো সবুজ পোশাক, পায়ে বুট। গলায় কবচ। একহাতে পিস্তল, অন্য হাতে চাবুক। এই হলো গাব্বার। চিত্রনাট্য দেখে এ চরিত্রই বেশি মনে ধরেছিলো বিগ বি’র। তিনি বলেন, ‘গল্পটা শুনেই চিত্রনাট্যকার সেলিম-জাভেদকে বলেছিলাম, গাব্বার চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। কিন্তু পরিচালক রমেশ সিপ্পি আমাকে জয় চরিত্রের জন্য নির্বাচন করেন। ’

গল্পে দেখা যায়- অখ্যাত এক ছোট্ট গ্রাম রামগড়ে ঠাকুরের ডাকে দুই তরুণ কয়েদি জয় আর বীরু নেমে পড়ে ডাকাত গাব্বারকে ধরার অভিযানে। গাব্বার চরিত্রের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন ড্যানি ডেনজংপা। কিন্তু তার সময় ফাঁকা না থাকায় আমজাদ খানকে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিত্রনাট্যকারদ্বয়। ভুল করেননি তারা, গাব্বার চরিত্রটি অমর হয়ে আছে তার দুর্দান্ত অভিনয়ে। চরিত্রটিকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য তরুণ ভাদুরির বিখ্যাত উপন্যাস ‘অভিশপ্ত চম্বল’ বইটি পড়ে চম্বলের ডাকাতদের সম্পর্কে জেনেছিলেন তিনি। ৭২ বছর বয়সী অমিতাভ বলেন, ‘আমজাদ খানের দরাজ কণ্ঠের সুবাদে সংলাপগুলো বিখ্যাত হয়েছে। তার সঙ্গে বেশকিছু ছবিতে কাজ করেছি। তিনি আমাকে শর্টি বলে ব্যঙ্গ করতেন। সেটে আমরা একসঙ্গে হাঁটলে সবাই বলতো ব্রড অ্যান্ড শর্টি’।

শুধু অমিতাভ নন, গাব্বার হতে চেয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। কিন্তু পরিচালক তাকে নির্বাচন করেন বীরু চরিত্রের জন্য। জানা গেছে, ‘শোলে’র ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে নাকি ঠাকুরের হাতেই মরতে হয় গাব্বারকে। কিন্তু বাদ সাধে সেন্সর বোর্ড। তাদের নির্দেশেই পাল্টাতে হয় ক্লাইম্যাক্স। ফলে দর্শকরা দেখেছে- পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া গাব্বারকে।

অমিতাভ আরও জানান, ‘শোলে’র ৯০ ভাগ কাজ করেছেন সেলিম-জাভেদ। এটি তৈরিতে আড়াই বছর লেগেছিলো। সে সময় কলাকুশলীরা থাকতেন একটি হোটেলে। বেঙ্গালুরুর কাছে এক পাথুরে ভূখন্ডে বেশিরভাগ দৃশ্যে কাজ হয়েছে। স্মৃতি রোমন্থন করে অমিতাভ বলেন, ‘যখন কাজ করছিলাম, আমরা কেউই বুঝতে পারিনি এটা ভারতীয় চলচ্চিত্রের মাইলফলক হয়ে যাবে। ’

আরেকটি পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হয়েছিলো বক্স অফিসের কথা ভেবে। ছবির শেষ দৃশ্যে জয়ের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। কিন্তু দর্শকরা প্রথম দিকে এ নিয়ে অখুশি ছিলেন। কারণ ১৯৭৫ সালেই মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিওয়ার’ ছবিতেও তাকে মরতে দেখেছিলো তারা। ওই ছবিরও চিত্রনাট্যকার ছিলেন সেলিম-জাভেদ। ফলে জয় বেঁচে আছে দেখানোর পরিকল্পনা করা হয়। তাই সবাই আবার রামনগর গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। কিন্তু পরিচালক রমেশ সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। এরপর তো ইতিহাস!

আকিরা কুরোসাওয়ার ‘সেভেন সামুরাই’ (১৯৫৪) ছবিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সাজানো হয়েছে ‘শোলে’। এতে আরও অভিনয় করেন সঞ্জীব কুমার, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, আসরানি, এ কে হাঙ্গাল প্রমুখ। সংগীত পরিচালনায় রাহুল দেব বর্মণ।

‘শোলে’রে জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে এটি রিমেক করেন রামগোপাল ভার্মা। ‘আগ’ নামের এ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ। কিন্তু এটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ার পাশাপাশি সমালোচিতও হয়েছে। বিগ বি মনে করেন, ‘অতুলনীয় ছবিটিকে রিমেক করা সম্ভবত ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫
বিএসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।