ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

শিল্পীদের ফেসবুক মঞ্চ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৬
শিল্পীদের ফেসবুক মঞ্চ (বাঁ থেকে) চয়নিকা চৌধুরী, প্রসুণ রহমান, অমৃতা খান ও শরাফ আহমেদ জীবন

প্রতি মুহূর্তের ভালোলাগা ভাগাভাগির সঙ্গী ফেসবুক। তাই বলে ক্ষোভ, অভিমান বা মন্দলাগার কথা চাপা পড়ে থাকবে? তেমনটি নয়।

সাধারণ মানুষের মতো বিনোদন অঙ্গনের শিল্পীরাও সামাজিক বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলছেন, ফেসবুক মঞ্চে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তুলছেন। টাইমলাইন ঘুরে নির্বাচিত তেমন কিছু স্ট্যাটাস নিয়ে বাংলানিউজের নিয়মিত আয়োজন ‘শিল্পীদের ফেসবুক মঞ্চ’…

‘অজস্র ধন্যবাদ শমী কায়সার’
চয়নিকা চৌধুরী, নির্মাতা
কাল (৩ জুলাই) শমী দেশের বাইরে যাবে। আমার নাটকের ৪টা সীনের ডাবিং লাগবেই। সময় রাত ১০টা ৫৫। গুলশান এর পুরা রাস্তা বন্ধ। প্রতিদিন শমী গুলশানের আযাদ মসজিদে নামাজ পড়ে। এদিকে শমীর গাড়ি আটকা পড়া। আমিও অপেক্ষা করছি ওর জন্য। চিন্তায় ছেলে মেয়ে ফোন দিচ্ছে বার বার।
‘মা তুমি কোথায়? কতোদূর? গন্ডগোল হচ্ছে। ’
আমি বললাম, ‘বনানী। চলে আসবো ডাবিং নিয়ে। "
কিন্ত শমী জানালো, ‘চয়ন, কি করবো!গাড়ী তো নড়েনা। ’
সিচুয়েশন মেনে না নিলেও মানিয়ে নিতে হয়।
হঠাৎ দেখি শমী উপস্থিত।
‘তুই কী করে এলি?’
‘হেঁটে। চয়ন, কাল আমি চলে যাবো। ডাবিংটা নিজ দায়িত্বে দিয়ে যাওয়া আমার উচিত একজন শিল্পী ও দায়িত্ববান মানুষ হিসাবে। ’
শমী পুরাটা ডাবিং দিলো।
এদিকে বাসা থেকে ফোনের পর ফোন। আমেরিকা থেকে শ্রাবন্তী ফোন দিলো আমি কোথায় জানবার জন্য।
শমীর গাড়ি এখন ও আটকানো।  আমি ওকে নামিয়ে দিলাম ইস্কাটনের বাসায়।


রাস্তা দিয়ে ফিরছি আর ভাবছি। তারাই আসলে আসল তারকা। যাদের পিছে আমাদের মতো সাধারণ নির্মাতাকে ঘুরতে হয় না। যারা এখনও ভালবেসে কাজ করেন। যারা মনে করেন, শুধু শুটিং করলেই হয় না। একটা ডাবিং তারই কাজের অংশ। বিপাশা, শমী, মিমি, সেলিম ভাই, আজিজুল হাকিম, তৌকীর আহমেদ, মাহফুজ আহমেদ, জাহিদ হাসান- তাদের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তাই তো তারা এখনও রাজত্ব করছেন। কারণ তারাই আসল তারকা। অজস্র ধন্যবাদ শমী কায়সার। বন্ধু অনেক ভালোবাসি তোকে। তুই দারুণ মনের একজন মানুষ। তোর ভালো হবেই।
২ জুলাই, ২০১৬

 

‘অনৈতিক প্রতিযোগিতায় ফেলে দিয়েছে’
প্রসূন রহমান, নির্মাতা 
প্রতিটি ঘরে টেলিভিশনের সগর্ব অবস্থান থাকলেও টেলিভিশন নিজে তার শক্তিমত্তার অপচয় করছে নিদারুনভাবে। কোনো চ্যানেলের পর্দায় মননশীলতার কোনো পরিচয় নেই, স্মার্টনেসের কোনো উদাহরণ নেই। একেকটি চ্যানেল যেন আরেকটি চ্যানেলের দুর্বল কপি মাত্র। বাংলাদেশ সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে বিনোদননির্ভর চ্যানেলগুলোও প্রতি ঘন্টায় খবর প্রচার করে থাকে। আর দর্শককে বিনোদন দেয়ার জন্যে নিরীহ নাটককেই একমাত্র উপায় ধরে নিয়ে পথ চলছেন তারা। ব্যতিক্রমী কোনো আয়োজন নেই। সৃজনশীলতার কোনো ছায়া নেই। গবেষণার ‘গ’-এরও দেখা মেলেনা কোনো চ্যানেলে। স্পন্সর পাবে না বলে কোনো চ্যানেলেই শিল্প-সাহিত্য বিষয়ক কোনো অনুষ্ঠান চোখে পড়ে না। সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্ব আর কাকে বলে!

বিজ্ঞাপনের তোড়ে ভাসতে ভাসতে দর্শকের বর্ডার ক্রস করে ফেলার গল্পটি অবশ্য অনেক আগেই ক্লিশে হয়ে গেছে। বলা বাহুল্য, চ্যানেলের আধিক্যই এই রোগের প্রধানতম কারণ। তাই রাজনৈতিক বিবেচনায় অতিরিক্ত লাইসেন্স দেওয়া খোদ সরকার ছাড়া এই অব্যবস্থা থেকে টেলিভিশনকে বের করে আনার আর কোনো টোটকা আর কারো জানা আছে বলে মনে হয় না।

যে দেশে একটা কমপ্লিট ফিল্ম ইনস্টিটিউট এখনও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি, টেকনিক্যাল ট্রেনিংয়ের জন্য যথেষ্ট রিসোর্স পার্সন নেই- সে দেশে এতো কর্মী কোত্থেকে আসবে সেটা না ভেবেই ৪০টি চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়া হলো।

অতিরিক্ত চ্যানেল দেওয়ার এই পলিসি খোদ টিভি চ্যানেলগুলোকেই অনৈতিক প্রতিযোগিতায় ফেলে দিয়েছে। সেই অনৈতিকতার প্রভাব পড়েছে এর প্রতিটি সেক্টরে। অতিরিক্ত সংখ্যার কারণে অযোগ্য লোকে ভরে গেছে এর প্রতিটি শাখা-প্রশাখা। এখন চ্যানেল বাঁচানোর তাগিদে বিজ্ঞাপন ধরার জাল ফেলতে গিয়ে নিজেরাই ধরা পড়ে বসে আছেন কর্পোরেট হাউস আর এজেন্সির কাছে।

টিভি স্ক্রিনের উপরের এক কোণায় চ্যানেলের লোগো (ঘূর্ণায়মান), আরেক কোণে- অ্যানিমেটেড ডগি (ঘূর্ণায়মান), নিচে দুটো স্ক্রল- (চলমান), তার উপরে পপ-আপ (উদীয়মান) আর এল-শেপ (অনুপ্রবেশ ও প্রস্থান) এরপর আর কিছু দেখবার বা যা দেখানো হচ্ছে তার ওপর মনোসংযোগ করবার আর কোনো উপায় থাকে না। থাকবার কারণ নেই।
১৩ জুলাই, ২০১৬

 

‘পুরোটাই ইন্ডিয়ান কালচার’ 
অমৃতা খান, অভিনেত্রী
ঈদের দুটি ছবি ‘শিকারী’ ও ‘বাদশা-দ্য ডন’-এর সবকিছুই ভালো লেগেছে। কিন্তু ছবিগুলোতে বাংলাদেশের কোনো কালচার নাই, পুরোটাই ইন্ডিয়ান কালচার। যেহেতু যৌথ প্রযোজনার ছবি, বাংলাদেশের কালচারটা দরকার ছিলো। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের আর্টিস্ট কলকাতার ফিল্মে কাজ করেছে…
১২ জুলাই, ২০১৬


‘হিন্দি সিনেমা বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা কইরেন না’
শরাফ আহমেদ জীবন, নির্মাতা
টেলিভিশন নাটক বানাতে গিয়া দয়া কইরা হিন্দি সিনেমা বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা কইরেন না।  
একটু আধটু গল্প ধার করেন ওই পর্যন্তই থাকুন। নিজের গল্পটা নিজের মতো কইরা বইলা ফালান অথবা বলা শুরু করেন। আরে ভাই, আপনারা নিজেরাই তো অনেক মেধাবী! 
হিন্দি সিনেমা দেখে শুধু মজা নিবেন আর বানাবেন নিজেরটা! স্যরি, একটু জ্ঞান দিয়ে ফেললাম। কিছু মগজের অপচয় দেখে কষ্ট লাগে তো,  তাই বলে ফেললাম!
৫ জুলাই, ২০১৬

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৬
এসও/জেএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।