প্রতি বছর মঞ্চে আসে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নাটক। তারপরও পুরস্কার দেওয়ার মতো নাট্যকার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেনো? এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নাটকপাড়ায়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০০৬ সালে মান্নান হীরার পর গত বছর নাটক বিভাগে পুরস্কার পেয়েছিলেন মাসুম রেজা। মাঝে আট বছর এ বিভাগে কাউকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে মানুষের হৃদয় কেড়েছে এমন অনেক নাটকের সংখ্যা বেশকিছু হলেও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাননি সংশ্লিষ্ট নাট্যকাররা।
প্রতি বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে সামনে রেখে কবিতা বা উপন্যাসের বই প্রকাশের জন্য হিড়িক পড়ে যায়। সেই তুলনায় নাটকের বই বের করতে অাগ্রহী নন প্রকাশকরা। অন্যদিকে নাট্যকাররাও বই প্রকাশের ব্যাপারে যত্মবান বা অর্থবান নন। ফলে পুরস্কার পাওয়ার জন্য বই জমা দেওয়া হয় না।
এ প্রসঙ্গে নাট্যকার মাসুম রেজা বলেন, ‘গত তিন দশকে মাত্র চার-পাঁচজন নাট্যকার এ পদক পেয়েছেন। এর প্রধান কারণ যোগ্যতা বিচারে বাংলা একাডেমির কাছে প্রকাশিত পাণ্ডুলিপি জমা দিতে হয়। ’
সমাধান হিসেবে ‘রঙের মানুষ’খ্যাত মাসুম রেজা ফেসবুকে উল্লেখ করেন, ‘নাটকের বই ছাপাতে প্রকাশকরা আগ্রহ দেখান না। অন্যদিকে নিজের পয়সায় বই প্রকাশ করার ইচ্ছে বা সামর্থ নাট্যকারদের থাকে না। ফলে যোগ্যতা থাকা সত্বেও একজন নাট্যকার বিচারকদের বিবেচনায় আসেন না। বাংলা একাডেমির প্রতি আমার প্রস্তাব, একটি নাটক মঞ্চস্থ হলেই সেটিকে প্রকাশিত পাণ্ডুলিপি হিসেবে বিবেচনা করুন। ’
এদিকে নাট্য রচয়িতা শুভাশিস সিনহা ফেসবুকে জানিয়েছেন, তার চারটি পাণ্ডুলিপির মধ্যে একটি ‘থিয়েটার’ নামে ম্যাগাজিনে প্রকাশিত। এবার মেলায় তিনটি পাণ্ডুলিপি এক মলাটে বের হবে। আগামীবার তিনি পুরস্কারের জন্য লড়বেন বলে মনঃস্থির করেছেন।
নাট্যশিল্পী অলোক বসু ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পুরো দেশের খবর নাই দিলাম, খোদ ঢাকা শহরেই প্রতি সন্ধ্যায় তিনটি নাটক মঞ্চায়িত হয়। বিপুলসংখ্যক দর্শক তা উপভোগ করেন। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ কী এসব চর্চা ও নাটকের খোঁজখবর যথাযথাভাবে রাখেন?’
এদিকে দেশের কবি-সাহিত্যিক ও নাট্যজনরা বলছেন, বর্তমান সময়ে অনেক ভালো ভালো নাটক হচ্ছে। নাটকে বাংলা একাডেমির পুরস্কার না দেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। শোনা যাচ্ছে, চলতি বছর নাট্যকারের নাম প্রস্তাবও করা হয়েছিলো। তবে কেনো পুরস্কার দেওয়া হলো না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এসও/জেএইচ