কিন্তু এতোটা পথ পাড়ি দেওয়া ও সফল হওয়া সহজ ছিলো না তার। ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ চিরায়ত এই কথাটিকে সংক্ষেপ করে ফরীদি বলতেন, ‘লোভে মৃত্যু’।
‘না’ করতে পারার দুঃসাহস ও ক্ষমতা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ছিলো ফরীদির। যে কারণে জীবনের প্রথম টিভি নাটকের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এবং তার এই ‘না’ শুনতে হয়েছিলো তৎকালীন বিশিষ্ট টিভি ব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীকে! এটাকে অনেকে বিরল ঘটনা মনে করেন।
১৯৮০ সালে ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এর মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিষেক হয় ফরীদির। নাটকটির প্রযোজক ছিলেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। বিটিভির তৎকালীন কর্মকর্তা আতিকুল হক চৌধুরীর ডাকে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন ফরীদি। ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এর চিত্রনাট্য পড়ে চরিত্র পছন্দ হয়নি তার। সরাসরি জানিয়েছিলেন যে, এতে কাজ করতে চান না তিনি। আতিকুল হক চৌধুরী অবাক হলেও বিষয়টি সহজভাবে নিয়েছিলেন। পরে আলাপ আলোচনায় আতিকুল হক চৌধুরীকে ফরীদি জানালেন যে, নাটকটির অন্য একটি চরিত্রে কাজ করতে চান তিনি। কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন যে, অন্য চরিত্রটি তার জন্য যুক্তিযুক্ত, সেটিই তার কাছে আকর্ষণীয়। মজার তথ্য হচ্ছে, চরিত্রটি ছিলো একটি দৃশ্যের। এই হলেন ফরীদি…
এই ঘটনা ফরীদি বলেছেন একটি সাক্ষাৎকারে। যুক্তি দিয়ে জানিয়েছিলেন, যে চরিত্র পছন্দ হবে না, হাজার শ্রম দিয়ে অভিনয় করলেও সেটি ভালো করা সম্ভব নয়। ক্যারিয়ারে ফরীদি এমন কাজ তেমন করেননি।
১৩ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন ফরীদির চলে যাওয়ার দিন। ২০১২ সালের এই দিনটিতে তার মৃত্যু হয়। শুধু অভিনয় দিয়ে মানুষকে বিমোহিত করেছিলেন ডাকসাইটে এই অভিনেতা। ফরীদিকে বলা হয় অভিনেতাদের অভিনেতা, আদর্শ শিল্পী। অনেকের কাছে ব্যক্তি ফরীদির গল্পও বেশ অনুপ্রেরণা দেয়। তারা কী জানেন, ফরীদির মতো শিল্পী হতে সাধনা লাগে, দৃঢ় একটি মেরুদণ্ড লাগে…!
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এসও