দেশীয় চলচ্চিত্রে ভিনদেশি শিল্পী-কলাকুশলীরা অনুমতিহীনভাবে কাজ করছেন— এমন অভিযোগের পালে নতুন করে হাওয়া লাগলো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে। দেশীয় প্রযোজনার ছবি ‘মনে রেখো’র অধিকাংশ শিল্পী ও কলাকুশলী ভিনদেশি বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী চলচ্চিত্রের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর অনুমতি নিয়ে বিদেশি শিল্পী-কলাকুশলিরা কাজ করে থাকেন। ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ‘মনে রেখো’র বেলায় তেমনটি মানা হয়নি। ২৯ মার্চ এ নিয়ে কথা বলতে সুমনের শুটিংস্পটে যান চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের কয়েকজন নেতা। এ নিয়ে সেখানে বাক-বিতণ্ডা হয়। সুমন বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এফডিসিতে আলোচনা করবেন বললেও কথা রাখেননি।
৩০ মার্চ এফডিসিতে এ ঘটনায় জরুরি সভা ডাকেন চলচ্চিত্র ঐক্যজোট সমিতির নেতারা। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সংশ্লিষ্ট সংগঠনের অনুমতি ব্যতীত শুটিংয়ে অংশ নিলে সদস্য পদ বাতিল করা হবে। জোটের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে খল অভিনেতা মিশা সওদাগর ‘মনে রেখো’র শুটিং ছেড়ে চলে আসেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি ফোনে কোনো মন্তব্য জানাননি। এদিকে ছবিটির নায়িকা মাহির ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি সূত্র বলছে, তিনি শুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
হার্টবিট প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ‘মনে রেখো’তে ভারতীয় শিল্পী, ক্যামেরাম্যান, নৃত্য পরিচালকসহ অন্যান্য কলাকুশলীরা প্রাধান্য পেয়েছেন। এ নিয়ে শুরু থেকে ক্যামেরাম্যান সমিতি, নৃত্য পরিচালক সমিতিসহ অন্যান্য সমিতি অভিযোগ করে আসছিলেন।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ছাড়াই টুরিস্ট ভিসায় বিদেশি তারকারা ও কলাকুশলীরা এসে কাজ করে যাচ্ছেন। গত বছর থেকে বিষয়টি আছে আলোচনার শীর্ষে। চলতি বছরের শুরুর দিকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট নানা পেশাজীবীদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে এই বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। এর সবশেষ উদাহরণ ‘মনে রেখো’র শুটিং স্থগিত হয়ে যাওয়া। একইভাবে পরিচালক কমল সরকার ‘পাগলামি’র শুটিং বন্ধ করে ঢাকায় ফিরছেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছবিটির শুটিং আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে দেওয়া হবে না। বারবার সতর্ক করা হলেও বিষয়টিকে কেউ গুরুত্ব দেননি। এসব আর মেনে নেওয়া হবে না। ’
খোকন আরও বলেন, ‘বিদেশি শিল্পী-কলাকুশলী নিয়ে কাজ করতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বৈধভাবে সেটা করতে হবে। সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কাজ করতে দেওয়া হবে না। ’
‘মনে রেখো’র ক্ষেত্রে এখন কী হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে খোকন বলেন, ‘শুরু থেকে তারা বিষয়টিকে জটিল করে ফেলেছেন। এখন সংগঠনগুলোকে বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে তারা আবার কাজ শুরু করতে পারবেন। ’
এ দিকে এ ঘটনায় ওয়াজেদ আলী সুমনের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সুমনের ব্যবহৃত রবি নম্বরটিতে কল যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এসও