ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

শিল্পী আবদুল জব্বার আর নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
শিল্পী আবদুল জব্বার আর নেই কণ্ঠশিল্পী আবদুল জব্বার/ফাইল ফটো

ঢাকা: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। 

বুধবার (৩০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  

মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন আবদুল জব্বার।

 

শিল্পীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএসএমএমইউ-এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বাংলানিউজকে বলেন, সকালে হাসপাতালে মারা যান কণ্ঠশিল্পী আবদুল জব্বার।  
 
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী আবদুল জব্বার দীর্ঘদিন ধরে কিডনি,  উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। কিছুদিন আগে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল ভর্তি করানো হয়।  

হারমোনিয়াম হাতে গান গেয়ে আবদুল জব্বার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেন।  

১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্ম নেওয়া আবদুল জব্বারের গান গাওয়া শুরু হয় ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে। তিনি ১৯৬২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।  

পরে ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান নির্মিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সংগমে’র গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। গানটির সুর করেছিলেন সত্য সাহা।  

১৯৬৮ সালে ‘পীচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ এবং ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেও নাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন।  

তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পায়।  

এছাড়া আবদুল জব্বারের গাওয়া ‘ওরে ও নীল দরিয়া’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গান এখনও মানুষের মুখে মুখে ফিরে। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া  ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রে এ গানটির সুর করেছিলেন আলম খান।  

একাত্তরের দুঃসময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গেয়েছেন অসংখ্য গান। সেখান থেকে প্রচারিত এই শিল্পীর গাওয়া গান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা ও মনোবল বাড়িয়েছে।

বাংলাদেশের জন্মলগ্নে ভারতের বিভিন্ন স্থানে গণসংগীত গেয়ে পাওয়া ১২ লাখ টাকা স্বাধীন দেশের সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন এই গুণী শিল্পী।  

নিজে জনমত সৃষ্টির পাশাপাশি ১৯৭১ সালে মুম্বাইয়ে ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করেছেন তিনি। স্বাধীনতার পর আরও অনেক কালজয়ী গানে কন্ঠ দেন আবদুল জব্বার।

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।  

আবদুল জব্বারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭/আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা
এজেডএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।