এই আক্ষেপ, এই হীনম্মন্যতায় ভোগার একেবারেই যুক্তি দেখেন না বলিউড নায়িকা সোনম কাপুর। বিশ্বজুড়ে ‘ফ্যাশন আইকন’ হিসেবে খ্যাত সোনম বরং এসব ‘অতিমাত্রিক চিন্তা’ থেকে বেরিয়ে নিজের মতো বাঁচার পরামর্শ দেন।
বছর দুয়েক আগে অনিলকন্যা এ বিষয়ে একটি নিবন্ধ লেখেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সেই নিবন্ধটি সম্প্রতি ফের আলোচনা তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। নিজেদের রূপসজ্জা নিয়ে খোলামেলা বক্তব্যের কারণে এই নিবন্ধটি প্রশংসিত হচ্ছে বেশ।
নিবন্ধটিতে সোনম বলেন, ‘প্রত্যেক বালিকা তার শোবার ঘরের আয়নায় জানতে চায়, আমি ওই নায়িকার মতো সুন্দর নই কেনো? তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, জেনে রাখুন, কেউ সেলেব্রিটি হয়ে জন্ম নেয় না। আমিও না, অন্য কোনো অভিনেত্রীও না। ’
তাহলে সোনমকে পর্দায় এতো সুন্দর লাগে কীভাবে? ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’র ‘রাজকুমারী’র সোজাসাপ্টা কথা, ‘সত্য কথা বলতে গেলে, আমি জনসম্মুখে আসার আগে কমপক্ষে ৯০ মিনিট মেকআপের চেয়ারে সময় কাটাই। আমার চেয়ারের পাশে ৩ থেকে ৬ জন মানুষ আমার চুল এবং মেকআপ করতে ব্যস্ত থাকেন। তাদের দক্ষ হাতের ছোঁয়া আমার নখে পড়ে। তাছাড়া আমার ভ্রু প্রতি সপ্তাহে তাদের স্পর্শে নতুন রূপ পায়। আমার শরীরের যত্নের জন্য আলাদা পরামর্শদাতা আছেন। যারা সার্বক্ষণিক আমাকে নানা পরামর্শ দিয়ে যান। ’
আর এই ফিটনেস? ‘নিরজা’ অভিনেত্রীর উত্তর, ‘প্রতিদিন আমি ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠি এবং সাড়ে ৭টায় ব্যায়ামাগারে যাই। সেখানে ৯০ মিনিট শরীরচর্চা করি। কখনো সন্ধ্যায় এমনকি ঘুমোতে যাওয়ার আগেও এই শরীরচর্চা করতে হয়। একজন লোকের এটাই চাকরি যে, আমি কী খাবো অথবা খাবো না তা নির্ধারণ করে দেওয়া। আমি যে চমৎকার পোশাকগুলো পরি ,তাও এই নিয়োজিত লোকেরা নির্ধারণ করে দেন। এতো কিছুর পরও আমি পুরোপুরি নিখুঁত নই। তারপরও অনেক ফটোশপের দক্ষ কারসাজি লাগে। ’
‘আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, অনেক টাকা, একটি দক্ষ দল ও প্রচুর সময় একজন মেয়েকে সেলেব্রিটির লুকে তৈরি করে তোলে, যেমনটা আপনারা দেখেন। এটি আসলে তাদের আসল রূপ নয়। আর এটা নিয়ে উচ্চাভিলাসী হওয়ারও কিছু নেই। ’
‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’র ‘সিমরান’র পরামর্শ, উচ্চাভিলাসী হতে হবে আত্মবিশ্বাস অর্জনে, নিজেকে সুন্দর, মুক্ত ও সুখী হিসেবে ভাবতে উচ্চাভিলাসী হতে হবে। সুতরাং এরপর থেকে যদি কোনো বালিকাকে দেখা যায় যে, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে কোনো ঝলমলে চুলের লাস্যময়ী নায়িকাকে দেখে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে, তবে তাকে বলুন ওই বালিকা নিজে কতো সুন্দরী। তার হাসির প্রশংসা করুন, প্রশংসা করুন তার মনন-চালচলনের। সে যেন এই বিশ্বাস নিয়ে বড় না হয় যে, তার মধ্যে খুঁত আছে। যেন তার কখনো মনে না হয় যে, বিলবোর্ডে যে সুন্দরীকে দেখছে, তার চেয়ে কোনো অংশে তার ঘাটতি রয়েছে। তার মনের মধ্যে এমন মানদণ্ড যেন তৈরি না হয়, যেটা ধারণারও বাইরে, এমনকি ওই বিলবোর্ডের নারীরও। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮
জেআইএম/এইচএ/