গুণী এই লোক ও পালাগানের শিল্পী এবার লোক ও আঞ্চলিক গানের সংগঠন ‘উজান পদক-২০১৯’-এ ভূষিত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) উজানের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বাউলমন’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে পদক গ্রহণের পর ‘উজান’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শাহ আলম সরকার তার বক্তব্যে বলেন, ‘গানের জন্য স্কুল ফাঁকি দিয়েছি। শৈশব থেকেই ঘরে মন বসতো না। যখন যেখানে খুশি ঘুরতে বেরিয়ে যেতাম। শুধু দিনের বেলায় নয়, কোথাও গানের অনুষ্ঠান হলে বাবা-মাকে ফাঁকি দিয়ে রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতাম। বলছি, কিশোর বয়সের কথা। বাবা-মা বারবার বারণ করার পরও রাতের বেলায় ঘর থেকে বেরিয়ে যেতাম। ’
‘কি করবো আমার তো মন মানে না। মনের বিরুদ্ধে শৈশবেই আমি কিছু করতে পারতাম না। এখনো না। গানপাগল হয়ে এভাবে রাতদিন বাইরে থাকার কারণে পরিবার আমার ভাত বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু মা ফাঁকিবাজ সন্তানের জন্য পরিবারকে ফাঁকি দিতেন। অর্থাৎ মা পরিবারের সবাইকে ফাঁকি দিয়ে আমার জন্য খাটের নিচে খাবার লুকিয়ে রাখতেন। আমাকে ইশারা করে বোঝাতেন আর আমি খাটের নিচে বসে চুরি করে খেতাম। এগুলো ছিল গানকে ভালোবাসা আর ঘর ও স্কুল পালানোর শাস্তি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কী করবো, আমার বাউলমন। বাউলমন তার নিয়মে চলে। কোনো বাধা মানে না। এসন বাধা না মানার নিয়ম আর প্রকৃতির প্রতিষ্ঠান আমাকে শাহ আলম সরকার বানিয়েছে। ’
গুণী এই শিল্পী অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার সৃষ্টি জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, ‘ফাইট্রা যায় বুকটা ফাইট্রা যায়’, ‘মায়ের কান্দন যাবৎ জীবন’, ‘আকাশটা কাঁপছিল ক্যান’, ‘বাঁন্ধিলাম পিরিতের ঘর’, ‘খর-কুটার এক বাসা বাঁধলাম বাবুই পাখির মতো’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৯
ওএফবি