এরই মধ্যে শোনা গেলো নতুন খবর। সিনেমাটির একটি বিশেষ অংশে বীরাঙ্গনা চরিত্রের জন্য অভিনয় করেন নুপুর হুসাইন রানী।
শিল্পীর অভিযোগ, পোস্টারে তার ছবি ব্যবহার করা হলেও তার নাম ব্যবহার করা হয়নি। শরীরের অন্যান্য অংশ দেখানো হলেও তার মুখ দেখানো হয়নি। গল্পের প্রয়োজনে একটি দৃশ্যে ব্লাউজ খুলে শুধু পেটিকোট পরে শট দিয়েছেন। কিন্তু অভিনয় করাবেন বলে নির্মাতা তাকে অভিনয়ের সুযোগ দেননি। অর্থাৎ তার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে মাসুদ পথিকের নামে থানায় জিডি করেছেন নুপুর হুসাইন রানী।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। এরপর কথা হয় নির্মাতা মাসুদ পথিকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেয়েটা কেনো এমন করলো, আমি জানি না! তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমার তেমন কথাও হয়নি। কথা বলেছে সিনেমাটির সহকারি পরিচালক। সে-ই তার সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেই। ’
মাসুদ পথিক আরও বলেন, ‘তাকে শুধুমাত্র পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে বীরাঙ্গনার ধর্ষণ’র দৃশ্যে ও শিল্পী শাহাবুদ্দিন স্যারের ‘ওমেন’ শিল্পকর্মের ছবি দেখিয়ে হাত বাঁধা দৃশ্যটা করতে বলা হয়েছে। সেও তাই করেছে, অন্যান্য বিশেষ চরিত্রের অভিনেত্রীদের মতো। ক্যাম্পে বীরাঙ্গনার নির্যাতনের দৃশ্যে অভিনয় করতে আসা অন্যসব বিশেষ অভিনেত্রীরাও অভিনয় করেছে নিজেদের দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে, যা রানীও করেছে। এছাড়া তার সঙ্গে আমাদের আর কোনো প্রকার চুক্তি হয়নি। এখন কার প্ররোচনায় মেয়েটি কেনো এমন করছে, সেটাই ভাবার বিষয়। সিনেমা মুক্তির আগে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ’
মাসুদ পথিক জানান, চলচ্চিত্রের পরিচালক তার সিনেমার কোন অংশে কাকে কতোটুকু, কিভাবে, প্রদর্শন করবেন বা বাদ দেবেন সেটা সম্পূর্নই তার নিজস্ব স্বাধীনতা, যদি না এই বিষয়ক কোনো বিশেষ চুক্তি পরিচালক ও শিল্পীর মধ্যে হয়ে থাকে। আর অভিযোগকারীর সঙ্গে এ ধরনের কোনো বিশেষ চুক্তি তারা করেননি’
নির্মাতা সবার উদ্দেশ্যে অনুরোধ করে বলেন, ‘আমরা সকলকে বিনীত অনুরোধ করছি, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও স্বদেশবিরোধী কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজাকারদের প্রেতাত্মার দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে নির্মিত এই সিনেমার অপপ্রচারে লিপ্ত হবেন না। অপপ্রচার করে থাকলে তা সংশোধন করুন। অন্যথায় আমরা আইনের দারস্থ হবো। ’
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মিডিয়াকর্মীদের এই অপপ্রচার এর বিরুদ্ধে তাদের দ্বায়িত্ব পালনের আহবান জানান তিনি।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম ‘ওমেন’ এবং কবি কামাল চৌধুরীর ‘যুদ্ধশিশু’ কবিতা অবলম্বনে ‘মায়া’র চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মাসুদ পথিক।
এতে অভিনয়ে দেখা যাবে, মুমতাজ সরকার (ভারত), প্রাণ রায়, জ্যোতিকা জ্যোতি, দেবাশিষ কায়সার, সৈয়দ হাসান ইমাম, ঝুনা চৌধুরী, নারগিস আক্তার, লীনা ফেরদৌসী, ড. শাহাদাত হোসেন নিপু, আসলাম সানী ও মজিদ প্রমুখ।
ব্রাত্য ক্রিয়েশন প্রযোজিত এই সিনেমাটিতে গান করেছেন- ইমন চৌধুরী, বেলাল খান, কোনাল, ঐশী, পুজা ও মমতাজ।
নেকাব্বরের মহাপ্রায়াণ’খ্যাত মাসুদ পথিকের এটি দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা। বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশুদের সত্য গল্প নিয়ে এই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা নির্মিত হলো বাংলাদেশে। সিনেমাটিতে নতুন বাংলা, বাংলা মাকে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নির্মাতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
ওএফবি