কলকাতা: দুর্গাপূজা শেষ হলেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকেই পশ্চিমবাংলার বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে লক্ষ্মীপূজা।
তবে প্রতিমার মুখ একেবারে অচেনাও নয়। উত্তম কুমারের ভবানীপুরের বাড়ির লক্ষ্মীপ্রতিমা বানানো হয় সেই বাড়িরই গৃহলক্ষ্মীর মুখে আদলে। মহানায়কের বাড়ির পুজোয় প্রতিমার মুখ হয় গৌরীরূপী অর্থাৎ উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরিদেবীর মুখের আদলে। সেই লক্ষ্মীপ্রতিমা বানিয়েই পূজা শুরু করেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার।
তখন যদুভট্ট সিনেমার শুটিং চলছিল। শিল্পী নিরঞ্জন পালকে মূর্তি বানানোর জন্য বাড়িতে ডেকে পাঠান উত্তম কুমার। উত্তম বলেন, প্রতিমার মুখ যেনো সাধারণ না হয়া অর্থাৎ আর পাঁচটা প্রতিমার মুখ যেরকম হয় সেরকমটা হলে চলবে না। ঠিক সেই সময় ঘোমটা টেনে ঘরের কাজ করছিলেন উত্তমের স্ত্রী গৌরিদেবী। ঘোমটার আড়াল থেকে একঝলক গৌরিদেবীকে দেখে শিল্পীর মনে ধরে যায় সেই মুখ। তারপর থেকে আজও উত্তম কুমারের বাড়িতে সেই গৌরীরূপী লক্ষ্মীর পূজো হয়ে আসছে।
বছরের পর বছর ধরে আজও সেই রীতি পালিত হয়ে আসছে। এক সময় উত্তম কুমার, তরুণ কুমার যে আসনে বসে পূজা করতেন, এখন সেই আসনে বসে পূজা করেন মহানায়কের নাতি তথা টলিউড অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায়। পারিবারিক রীতি মেনে গৌরবই এখন লক্ষ্মীপূজার সব দায়িত্ব পালন করেন।
বাড়ির প্রবেশমুখ পেরিয়েই বড় উঠোন। তার সামনেই ঠাকুরঘর, সেখানেই সাবেকি আলপনা দিয়ে ফুলে সাজানো হয় প্রতিমার আসন। রীতি অনুযায়ী এখন সাজান গৌরব ও তার বোনেরা। একসময় বাড়িতে নানা রকমের মন্ডা মিঠাই তৈরি হত। ভোগ রান্না হত বাড়ির ছাঁদে। এই দিনটিতে তারকা থেকে ভিআইপি সবাই আসতেন পূজাতে। কিন্তু এখন কালের নিয়মে পূজার কলেবর ছোট হয়েছেন। এখন আর সেই জৌলুস নেই। তবে আজও পূজা হয় নিয়ম মেনেই। যে রীতি উত্তম কুমার চালু করেছিলেন।
মহানায়ক জীবিত থাকাকালীন পূজার দিন সারারাত পরিবারের সদস্যরা মিলে উত্তম কুমারের ছবি দেখতেন। এখন সেই নিয়মের আর চল নেই। তবে বদলায়নি প্রতিমার মুখ। বদলায়নি পূজার রীতি রেওয়াজ।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, ২০ অক্টোবর ২০২১
ভিএস/এনএটি