ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

৭৫ পেরিয়ে শবনম

‘আম্মাজান’র পর আর সিনেমা করেননি শবনম

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
‘আম্মাজান’র পর আর সিনেমা করেননি শবনম চিত্রনায়িকা শবনম

‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন, কপোলের কালো তিল পড়বে চোখে’ ষাটের দশকের এ গানটি আজও সমান জনপ্রিয়। মাহমুদুন্নবীর গাওয়া কালজয়ী এ গানটি চিত্রনায়িকা শবনমের উদ্দেশ্যে নায়ক রাজ রাজ্জাকের লিপে শোনা যায়।

নন্দিত এ অভিনেত্রীর জন্মদিন মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট)। আজ ৭৬-এ পা রাখছেন শবনম। ১৯৪৬ সালের আজকের এ দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পারিবারিক নাম ঝর্ণা বসাক।  

এবারের জন্মদিন নিয়ে শবনম বলেন, ‘জীবনের কত রূপ দেখেছি, বিভিন্ন বয়সে জীবনের সৌন্দর্যকে উপভোগ করেছি। কত কত মানুষের সঙ্গে পরিচয়, কত কিছু শিখেছি এক জীবনে, সত্যি বলতে কী মৃত্যু পর্যন্ত জীবন সুখ-দুঃখের খেলা। এই বয়সে জন্মদিন নিয়ে উচ্ছ্বাস নেই। ’ 

সবশেষ শবনমকে নায়ক মান্না অভিনীত ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রে দেখা গেছে। এরপর তাকে আর চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে চলচ্চিত্র থেকে গুটিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন।  

ওই সময় শবনম বলেছিলেন, ‘আম্মাজান’ করার পর উপযুক্ত চরিত্রের অভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো হয়নি। ইচ্ছে থাকলেও একই সঙ্গে মনের মতো চিত্রনাট্য ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর কাজ করা হয়নি।  

সেখানে তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ অভিনয় জীবনে আপনাদের যে ভালোবাসা পেয়েছি তাতে আমি কৃতজ্ঞ। জীবনে অনেক অপ্রাপ্তি থাকলেও বহুদিন পর সিনেমার মানুষের কাছে এসে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে চিরঋণী হয়ে থাকব।

শবনম চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছিলেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। এরপরের বছর উর্দু সিনেমা ‘চান্দা’য় অভিনয় করে পাকিস্তানে তারকাখ্যাতি পান তিনি।

শবনম বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করলেও দীর্ঘ সময় অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের সিনেমায়। পাশাপাশি এ অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রেও। পাকিস্তানের সিনেমায় তার অবদান এতোটাই যে সেখানকার মহানায়িকা বলা হয়ে থাকে শবনমকে। তার অভিনয়ের গুণে দেশটির চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার নিগার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১৩ বার।

ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে শবনম পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। সেখানে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত একচ্ছত্র বিস্তার করেছিলেন তিনি। হয়তো বিশ্বে তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী যিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত তিন দশক ধারাবাহিকভাবে একটি ইন্ড্রাস্টিতে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন।

এ সময়কালে পাকিস্তানে শবনম-ওয়াহিদ মুরাদ, শবনম-নাদিম জুটি জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীকালে পাকিস্তানে বসবাস শুরু করায় পাঞ্জাবি সিনেমাতেও অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী।

ষাটের দশকে তার অভিনীত ‘তালাশ’ সিনেমা পাকিস্তানে মুক্তি পেলে ওই সময়ের সর্বাপেক্ষা ব্যবসা সফল সিনেমার মর্যাদা লাভ করে। এছাড়া তার অভিনীত ‘আয়না’ সিনেমা পাকিস্তানের সিনেমা হলগুলোতে দীর্ঘদিন চলার রেকর্ড করে।

১৯৮৮ সালে পুনরায় ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন শবনম। আর নব্বইয়ের দশক থেকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে একমাত্র ছেলে রনিকে নিয়েই তিনি রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় বসবাস করছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।