ঢাকা: রৌদ্রজ্জ্বল দিন। বাতাসে ফুলের মৌ মৌ গন্ধ।
শীতের রুক্ষতাকে পিছনে ফেলে প্রকৃতিকে আবার নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার আগমনী বার্তা নিয়ে আসে বসন্ত। গাছে গাছে নতুন পাতা গজায়। ফুলের মুকুল আসে। পাখি গান গায়। আর বাতাসে ভাসে মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ। প্রজাপতিরা রঙিন ডানা মেলে জানায় ঋতুরাজের আগমনী বার্তা।
বসন্ত শুধু প্রকৃতিতেই নয় মানুষের মনেও জাগায় প্রাণের ছোঁয়া। তাই বসন্তের প্রথম দিনটিকে উদযাপন করতে সবাই মেতে ওঠে উৎসবে। নিজেকে সাজিয়ে তোলে বসন্তের রঙে।
ফাল্গুন ও চৈত্র, এ দু’টি মাস নিয়ে ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন বাংলা বছরের ১১তম মাস। রঙিন এ মাসটিতে গাছে গাছে ফোটে শিমুল, পলাশ, গাঁদাসহ আরও কতশত রঙিন ফুল।
পহেলা ফাল্গুনকে সাদরে আমন্ত্রণ জানাতে প্রতিবছর সারাদেশে নানা রকম বিশেষ আয়োজন থাকে। বলা যায়, প্রতিটি মানুষের মনেই থাকে উৎসব রব।
চলতি বছর ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, পহেলা ফাল্গুন দিনটি পড়েছে ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখে। বসন্ত শুধু একটি ঋতুই নয়। ভালোবাসার আরেক নামও বসন্ত। বহু আগে থেকেই পহেলা ফাল্গুনকে বাংলা ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তাই বলা যায়, ভালোবাসার দিক থেকেও বাঙালি পশ্চিমাদের তুলনায় একধাপ এগিয়েই রয়েছে।
ফাল্গুন নামটি এসেছে মূলত ফাল্গুনী নামে নক্ষত্র থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে চন্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষ উভয়ই মেনে চলা হতো। ফাল্গুন ছিল পূর্ণ চন্দ্রের মাস।
ইতিহাসের পাতা ওল্টালে, ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু হয়। সেসময় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের সংস্কৃতি থেকে নিজেদের আলাদা করতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনার পাশাপাশি বাঙালি নিয়মে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু করে। তবে ১৯৬০ সালেই পশ্চিম পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
তবে তাতে বাঙালি দমে যায়নি। দেশ স্বাধীনের আগেও এদেশে পালন হয়ে এসেছে পহেলা ফাল্গুন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি বছর নতুন নতুন রূপে, বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনায় পালিত হয় বাঙালির অন্যতম একটি উৎসব পহেলা ফাল্গুন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫
** স্বাগতম হে ঋতুরাজ বসন্ত