খুলনা: গাছে গাছে আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে মৌ মৌ গন্ধ।
ইটপাথরের কৃত্রিম নগরে আমের মুকুলের লাবণ্যময় দৃশ্য যেকোনো পথিকের হৃদয় স্পর্শ করবে।
একইভাবে জেলার গ্রামগুলোতে আমের মুকুলে মুকুলে ভ্রমরের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি কচি পাতার আড়াল থেকে ভেসে আসা কোকিলের কুহুতানে উদাস করা প্রকৃতি হৃদয়ের গভীরে এক অনির্বচনীয় ব্যাকুলতা জাগিয়ে তুলছে।
এবার নির্ধারিত সময়ের কিছু দিন আগেই আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষিবিদ ও গাছের মালিকরা। আমচাষীরা মুকুল যাতে কুয়াশা ও পোকার আক্রমণে নষ্ট না হয় এজন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ স্পে করে চলেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনা মহানগরীর শিশু হাসপাতালের সামনের সড়কের পূর্ব পাশে, খান জাহান আলী সড়ক, বাইতি পাড়া, লেয়ার যশোর রোড, নিরালা আবাসিক এলাকা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, হরিণ টানা, লবনচরা এলাকার আমের মুকুলে সাজিয়ে আছে বৃক্ষ। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। এখানকার বাতাস এখন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর।
নগরী ছাড়াও জেলার ডুমুরিয়া, রূপসা, বটিয়াঘাটা, ফুলতলা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, পাইকগাছা উপজেলার আম গাছগুলোতে এখন শোভা পাচ্ছে থরে থরে মুকুল।
যে গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করে। আম গাছগুলো তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে।
পশ্চিম রূপসা স্ট্যান্ড রোড এলাকার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, শীত শেষ হতে না হতেই আম গাছে আসতে শুরু করেছে আমের মুকুল। মুকুল জানান দিচ্ছে মধুমাসের, তার সাথে বাতাসে বইছে সুন্দর নির্মল গন্ধ। শহরে থেকেও এমন দৃশ্য দেখে বেশ ভালো লাগছে।
তার মতে, শহরে এত আমের মুকুল আগে কখনও দেখা যায়নি।
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া এলাকার আমচাষি ফজলে রাব্বি বলেন, পুরানো ও নতুন সব ধরণের গাছেই মুকুল এসে গেছে। অনুকূল আবহাওয়া বিদ্যমান এবং বৃষ্টি ও ঝড়ে মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত না হলে, এবার আমের ভালো ফলন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলানিউজকে বলেন, আমের মুকুল ও কুড়ির জন্য আবহাওয়া পরিস্থিতি এখন অনুকূল রয়েছে। হাজার হাজার আম গাছের মুকুল দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। যে বাগানগুলোতে মুকুল এসেছে সে সব বাগান মালিকরা পরিচর্যাও শুরু করেছেন। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে আমের বাম্পার ফলন হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষমুক্ত ফল উপহার দেওয়ার জন্য চাষি ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে অচিরেই বৈঠক রয়েছে।
খুলনার আমও যেন সাতক্ষীরার ন্যায় বিদেশে রপ্তানি করা যায় জেলা প্রশাসকের সে ধরণের নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
এমআরএম/এমজেএফ/