ঢাকা: প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ। গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক- অনেক পরিচিতি তার।
২৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) হুমায়ুন আজাদের জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
স্কুলে পড়া অবস্থাতেই তিনি কবিতা লিখতেন। যখন নবম শ্রেণির ছাত্র তখন দৈনিক ইত্তেফাকের কচিকাঁচার আসরে তার প্রথম লেখা ছাপা হয়। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ প্রকাশ হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে ‘ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল’ উপন্যাসের মাধ্যমে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে ৮০’র দশকেই ভাষা গবেষণা, রাজনৈতিক সমালোচনা ও স্বতন্ত্র বিশ্বাস ও দর্শন দিয়ে পাঠক পরিমণ্ডলে ব্যাপক সাড়া ফেলেন হুমায়ুন আজাদ।
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বহুমাত্রিক মননশীল লেখক হুমায়ুন আজাদের জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর মোট ৭০টির বেশি বই প্রকাশ পেয়েছে। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, সমালোচনা গ্রন্থ, কিশোরসাহিত্য, ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ। হুমায়ুন আজাদের লেখনীতে স্পষ্ট ছিলো ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কার বিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ, রাজনৈতিক ও কঠোর সমালোচনামূলক বক্তব্য।
‘নারী’, ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’ ও ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’- এ তিনটি বই প্রকাশের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। মৌলবাদীদের গোঁড়ামির চাপে পড়ে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত নারী বইটি বাজেয়াপ্রাপ্ত করে বাংলাদেশ সরকার। এ ঘটনার চার বছর পর ২০০৪ সালে পূর্ণমুদ্রণ করা হয় বইটি।
জীবনের শেষভাগে হুমায়ুন আজাদ মৌলবাদ ও সামরিক শাসন বিরোধী, নারীবাদী ও যৌনবাদী লেখালেখির জন্য পাঠক সমাজে জোরালো দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একইসঙ্গে একশ্রেণীর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কঠোর রোষানলে পড়েন। উন্মুক্তধারায় কলম চালিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তীব্র আক্রমণের জন্য ২০০৪ সালে হত্যা প্রচেষ্টার শিকার হন সপ্রতিভ লেখক হুমায়ুন আজাদ। মৌলবাদীদের হামলার শিকার হয়ে যান জার্মানিতে। সেখানে একই বছরের ১১ আগস্ট মারা যান তিনি।
২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য হুমায়ুন আজাদকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
এসএমএন/এএ