ঢাকা: রোজাদারের রোজা শেষ হয় ইফতারের মাধ্যমে। ইফতারের আয়োজনে থাকে নানা ধরনের সুস্বাদু আইটেম।
আমাদের দেশকে দিয়েই শুরু করা যাক। বাংলাদেশের কমন ইফতারে থাকে খেজুর, পেঁয়াজু, বেগুনি, হালিম, জিলাপি, মুড়ি ও ছোলা। একটু ব্যতিক্রমী হলে থাকে সমুচা, ফিশ কাবাব, মাংসের কিমা ও মসলা দিয়ে তৈরি কাবাবের সঙ্গে পরোটা, মিষ্টি ও ফল। শরবতসহ এসব খাবার এদেশের ইফতার টেবিলকে দেয় পরিপূর্ণ রূপ।
ব্রুনাই দারুসসালাম
স্থানীয় ভাষায় এখানে ইফতারকে সোংকাই বলে। এটি ঐতিহ্যগতভাবে আঞ্চলিক বা গ্রামের মসজিদে আয়োজন করা হয়। সরকার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই সোংকাইয়ের আয়োজন করে। ইফতারের আগে বেদুক নামে এক ধরনের ড্রাম বাজানো হয়। বেদুক বাজা মানে ইফতারের সময় হয়ে গেছে। রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানে সোংকাইয়ের সংকেত হিসেবে কামান থেকে গুলি ছোড়া হয়।
ভারত
ইফতার সাইরেন ও আজানের পর ভারতীয় মুসলিমরা খেজুর ও পানি পানের মাধ্যমে রোজা ভাঙেন। হায়াদ্রাবাদে হালিম দিয়ে ইফতার শুরু হয়। তামিলনাড়ু ও কেরালায় ননবু কাঞ্জি দিয়ে ইফতার হয়। এটি চাল, সবজি ও মাংস দিয়ে তৈরি ভাত জাতীয় একটি আইটেম। দিল্লি, মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশে পরিবার ও প্রিয়জনেরা একসঙ্গে ফলের রস ও পাকোড়া এবং সমুচার মতো ফ্রাইড ডিশ দিয়ে ইফতার শুরু করেন।
ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ায় ইফতারকে বুকা পুয়াসা বলে। সেখানেও বেদুক বাজানোর মাধ্যমে ইফতারের সময় নিশ্চিত করা হয়। আছরের নামাজের পর ঐতিহ্যবাহী বাজারগুলোতে বিভিন্ন ইফতার আইটেম বিক্রি হয়।
ইরান
প্রপার পারসিয়ান ইফতারে আয়োজন কিন্তু খুব বেশি কিছু নয়। চায়ে (চা), লেভাস বা বারবারি নামের একধরনের রুটি, পনির, তাজা ভেষজ উদ্ভিদ, মিষ্টি, খেজুর ও হালুয়া দিয়েই চলে সেখানকার ইফতার।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার বারবুকা পুয়াসা, মানে ইফতারে স্থানীয়রা আখের রস ও সয়াবিন মিল্ক খান। স্থানীয় খাবারের মধ্যে থাকে লেমাক লাঞ্জা, আয়াম পেরিক, নাসি আয়াম, পপিয়া বানাস ও অন্যান্য খাবার। মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ মসজিদে রোজায় আসরের নামাজের পর স্থানীয়দের ফ্রি রাইস পরিজ দেওয়া হয়।
মালদ্বীপ
মালদ্বীপে ইফতার রোয়াদা ভিলান নামে পরিচিত। তাদের ইফতারের মূল উপাদান শুকনো বা ফ্রেশ খেজুর। বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ বা হোটেলে ইফতার ও ডিনারের বিশেষ আয়োজন থাকে। অন্যদিকে সেখানকার মসজিদগুলোতে ফ্রি খেজুর জুসের ব্যবস্থা করা হয়।
পাকিস্তান
পাকিস্তানে ইফতারে থাকে ভারী আয়োজন। ইফতারে রাখা হয়- চিকেন, স্প্রিং রোল, শামী কাবাব, ফ্রুট সালাদ, চানা চাট, সমুচা, চাটনি, ক্যাচআপ, নামাক পরোটা, মসলাদার ও মিষ্টি খাবার।
মস্কো
রাশিয়ার মুফতি কাউন্সিল পাবলিক ইফতারের আয়োজন করে। রোজা ভাঙতে খেজুর ও অন্য ফল রাখা হয়। এরপর স্যুপ, রুটি ও বিভিন্ন স্থানীয় খাবারের আয়োজন থাকে। ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়, রাশিয়ান ঐতিহ্যবাহী কাভাস তৃষ্ণা মেটাতে সেরা পানীয়।
তুর্কি
তুর্কির ইফতারে থাকে অ্যাপিটাইজার ও স্যুপ। এর সঙ্গে রাখা হয় খেজুর, জলপাই, পনির, টার্কিস ব্রেড ও নানা ধরনের পেস্ট্রি।
আরব
আরবে ইফতারের শুরুকেই খেজুর খাওয়া হয়। এরপর থাকে ডালের স্যুপ। মাগরিবের নামাজ আদায়ের পর ইফতারের তৃতীয় ধাপে মেইন ডিশ হিসেবে মেষের পা, টমেটো, শসা, পিতা সালাদ, সুজির কেক ও সবুজ চা খাওয়া হয়।
আফগানিস্তান
গরু বা খাসির মাংসের কাবাব, বিভিন্ন প্রকার ফ্রেশ ও শুকনো ফল এবং জুস এ অঞ্চলের ইফতার টেবিলের মধ্যমণি।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৬
এসএমএন/এএ