ঢাকা: ‘ফুল নিবেন ফুল, ফুলের মালা নিবেন, নেন না একটা মালা, ফুল, নেননা..’। রাজধানীর অভিজাত এলাকা, শপিংমল কিংবা যানজটে বসে থাকা যে কারোর কানই আওয়াজগুলোর সঙ্গে পরিচিত।
এ বয়সে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা তাদের। কিন্তু পেটের তাগিদে ফুল বিক্রি করে রাস্তাঘাটে। ফুলের মতো মলিন মুখের এসব শিশুদেরও আছে কিছু কথা, কিছু স্বপ্ন।
পরশ মনি ঝুমু। বয়স মাত্র ৮ বছর। ধানমন্ডির রাস্তায় রাস্তায় ফুল বিক্রি করে। একটি বেলি ফুলের ছোট মালা ১০ টাকা করে বিক্রি করে সে। বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে ঝুমু।
নিশি, প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানমন্ডির শংকরের রাস্তায় ফুল বিক্রি করে। ফুল বিক্রির টাকা দিন শেষে মায়ের হাতে তুলে দেয়। বস্তির একটি স্কুলে ক্লাস থ্রিতে পড়ে নিশি। স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার।
বিবি ফাতেমা (৯)। বেলি ফুলের মালা ও বেলুন বিক্রি করে ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে। তার সাদাসিদে কথা, ‘বিক্রি হলে হবে না হলে নাই’। বড় হয়ে কি হতে চাও প্রশ্নে কোনো সদুত্তরও পাওয়া গেলো না।
নূরনাহার, বয়স মাত্র ৭ বছর। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানমন্ডির স্টার কাবাবের সামনে ফুল বিক্রি করছে সে। তবে কোনো জুটি দেখলে ফুল নিয়ে হাত জড়িয়ে ধরে।
ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাথায় ফুল বিক্রি করে ৯ বছর বয়সী মো. আউয়াল। বাবা রিকশা চালায়, বড় হয়ে সেও রিকশা চালাবে বলে জানায়। ভাই সাওয়ালও ফুল বিক্রি করে। তবে সে ভাইয়ের মতো রিকশা চালক হতে চায়না।
রায়ের বাজার আড়তে বাড়ি সজল মিয়ার। ধানমন্ডির রাস্তাগুলোতে ফুল বিক্রি করে সে। মন যেখানে চায় সেদিকে চলে যায়। সজল বলে, ভিক্ষা করতে ভালো লাগে না, তাই ফুল বিক্রি করি। তবে মানুষের গালিগালাজে মন খারাপ হয় তার। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় সজল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
জেডএস