ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

জামালের ‘অনৈতিক’ আচরণে ক্ষুব্ধ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
জামালের ‘অনৈতিক’ আচরণে ক্ষুব্ধ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

দেশের ফুটবলে হঠাৎ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন জামাল ভূঁইয়া। আর্জেন্টিনার ক্লাব সোল দে মায়োর সঙ্গে চুক্তি করেছেন তিনি।

প্রথমে চুক্তির খবর নিজেই ফেসবুক পোস্টে অস্বীকার করেন জামাল। পরে নিজেই জানালেন চুক্তির কথা।  

দেশ ছাড়ার আগে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের কাগজে স্বাক্ষর করে গেছেন তিনি। নতুন মৌসুমের জন্য শেখ রাসেলের সঙ্গে চুক্তি করে আর্জেন্টিনার ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ বলেই মনে করেন ক্লাব কর্মকর্তারা। তার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ক্লাবের সকলেই।

গত শুক্রবার রাতে সোল দা মায়োর সঙ্গে দেড় মৌসুমের চুক্তি সম্পন্ন করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার আগে গত ২০ জুলাই ক্লাবের সঙ্গে (৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে) চুক্তি করেছেন জামাল। তবে বাংলাদেশে ফুটবলারদের ক্লাবে সঙ্গে বাফুফের কাগজে চুক্তি করতে হয়। জামাল ছুটিতে যাওয়ার পরে বাফুফের চুক্তির কাগজ আসায় সেখানে স্বাক্ষর করা হয়নি তার। জামাল বলেছেন, চুক্তির কাগজে লেখা তার মা-বাবার নাম, মোবাইল নম্বর ভুল এবং পাসপোর্ট নম্বরও লেখা নেই। তবে চুক্তিপত্রে সেই সকল তথ্য নিজের হাতেই পূরণ করেছেন জামাল। স্বাক্ষরও করেছেন তিনি। তবে কি পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই এমনটা করেছেন তিনি? প্রশ্ন থেকেই যায়।

জামালের এমন কর্মকান্ড নৈতিকতা বিবর্জিত বলে মনে করেন ক্লাবের ডিরেক্টর অব ফিন্যান্স মোঃ ফখরুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনা আমাদের দেশকে ভালোবাসে। সেই ভালোবাসা থেকেই তারা বাংলাদেশের একজন ফুটবলার নিতে চেয়েছে। সেই সুযোগটাই জামাল কাজে লাগিয়েছেন। তবে সে এভাবে প্রতারণা না করলেই পারতেন। ’

শেষটা সুন্দর হতে পারতো বলে মনে করেন মোঃ ফখরুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সে (জামাল) যেতে চাইলে তো আর আমরা তাকে আটকে রাখতাম না। আমাদের দেশের ছেলে আর্জেন্টিনার ক্লাবে খেলবে এটা তো ভালো সংবাদ। আমরা বরং তাকে সংবর্ধনা দিয়ে বিদায় দিতে পারতাম। তবে আমাদের সঙ্গে এই ধরনের প্রতারণা না করলে শেষটা আরও সুন্দর হতো। ’

গত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের সমর্থকদের ভালোবাসা পুরো বিশ্বের নজর কাড়ে। এই ভালোবাসায় আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের একটা সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তারা বাংলাদেশে নিজেদের দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। সমর্থকদের ভালোবাসা পূঁজি করেই আর্জেন্টিনার ক্লাবে পড়ি জমিয়েছেন জামাল, এমনটাই মনে করেন ফুটবল বোদ্ধারা।  

জামালের বিষয়ে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তা নিয়ে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। মোঃ ফখরুদ্দিন বলেন, ‘এখনো আমাদের কাছে কোনও কাগজ আসেনি। যদি আমাদের কাছে কোনো কাগজ আসে, তখন আমরা চিন্তা করব আসলে আদালতে যাওয়া উচিত, নাকি উচিত না; নাকি ছাড় দেওয়া উচিত। তবে এটুকু বলব, সে একজন প্রতারক। চুক্তির কাগজে সে কিন্তু নিজ হাতে তার নাম, বাবা, মায়ের নাম এবং মোবাইল নম্বর লিখেছে। ’

ফুটবল-সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন, শেখ রাসেলের সঙ্গে চুক্তিটি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাগজে না হওয়ায় অন্য ক্লাবে খেলতে কোনো বাধা নেই ডেনমার্ক প্রবাসী এ ফুটবলারের। আবার কারও কারও দাবি, বাফুফের পেপারে চুক্তি না হলেও যেহেতু রাসেলের দেওয়া কাগজে স্বাক্ষর করেছেন, তাই জটিলতায় পড়তে পারেন তিনি। সে ক্ষেত্রে চাইলে জামাল ভূঁইয়াকে আদালতে নিতে পারে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।

সেক্ষেত্রে আইটিসি নিতে শেখ রাসেলের কাছে আসতেই হবে জামালকে। তখন নিজের ভুল স্বীকার করেই আইটিসি নিতে হবে জামালকে, এমনটাই জানিয়েছেন মোঃ ফখরুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যখন আইটিসি চাইবে, তখন তাকে আমাদের কাছে বলতে হবে, সে এখানে চুক্তি করেছে এবং যা লিখেছে সবই তার নিজ হাতের। তার আবেদন আমরা আমাদের বোর্ডের সকলের সমানে উপস্থাপন করবো। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।