লা লিগায় টানা ৭ ম্যাচ জিতে উড়ছিল বার্সেলোনা। নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে উড়তে থাকা দলটিকে এবার মাটিতে নামালো ওসাসুনা।
ঘরের মাঠ এল সাদার স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে ওসাসুনা ৪-২ গোলে হারিয়েছে বার্সাকে। ওসাসুনার হয়ে জোড়া গোল করেছেন দলটির ফরোয়ার্ড আন্তে বুদিমির। বাকি দুই গোল উইঙ্গার ব্রায়ান সারাগোসা ও আবেল ব্রেতোনেসের। বার্সার হয়ে দুই গোল শোধ করেন পাউ ভিক্তর ও লামিনে ইয়ামাল।
এটি এবারের লিগে কাতালান জায়ান্টদের প্রথম হার। অন্যদিকে লিগে এক যুগ পর নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে হারানো ওসাসুনা। তাদের সর্বশেষ জয়টি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
এই হারে বার্সার নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের একটি কীর্তি গড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল। জেরার্দো মার্তিনোর গড়া লা লিগায় বার্সার হয়ে নিজের প্রথম ৮ ম্যাচ জেতার কীর্তিতে ভাগ বসাতে পারতেন জার্মান এই কোচ। কিন্তু তা আর হলো না।
ওসাসুনার বিপক্ষে দারুণ ফর্মে থাকা লামিনে ইয়ামালকে একাদশের বাইরে রাখে বার্সা। এমনকি রাফিনিয়াকেও রাখা হয় বেঞ্চে। চোটজর্জর দলে কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন হয়তো বার্সা বস ফ্লিক। লেফট-ব্যাক আলেক্স বালদের পরিবর্তে ক্লাবটির ‘বি’ টিমের খেলোয়াড় জেরার্দ মার্তিন এবং সেন্টার ব্যাক ইনিগো মার্তিনেসের পরিবর্তে সের্জি দমিঙ্গেসকে নামিয়ে দিয়েছিলেন ফ্লিক। আক্রমণভাগে ভিক্তর ও ফেরান তোরেসকে দিয়ে শুরু করান তিনি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো হারতে হয়েছে বাজেভাবেই।
ম্যাচের শুরুতে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণ জমাতে পারছিল না বার্সা। এই সুযোগে ১৮তম মিনিটেই এগিয়ে যায় ওসাসুনা। ব্রায়ান সারাগোসার ক্রসে পাওয়া বল দারুণ হেডারে জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন বুদিমির। এর মিনিট দশেক পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। এবার বার্সার দুর্বল রক্ষণ ভেদ করে গোলমুখে থাকা বার্সা গোলকিপার ইয়ানিক পেনিয়াকে পরাস্ত করেন সারাগোসা।
প্রথমার্ধে দুই গোল হজম করা বার্সা ৭২ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখেছিল। কিন্তু একটি শটও নিতে পারেনি। উল্টোদিকে পাঁচ শটের দুটিকেই গোলে পরিণত করে ওসাসুনা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বার্সা। ৫৪তম মিনিটে ওসাসুনা গোলকিপারের ভুলে ব্যবধান কমায় সফরকারীরা। গোলকিপার সের্হিও এরারের ছোট পাস বুঝতে পারেননি এক ডিফেন্ডার। এই সুযোগে ছুটে গিয়ে বল দখলে নিয়ে জালে জড়িয়ে দেন ভিক্তর। ব্যবধান কমানোর পরেই কিছুটা উজ্জীবিত হয়ে ওঠে বার্সা।
আক্রমণের ধার বাড়াতে ভিক্তর ও পাবলো তোরেকে তুলে নেন ফ্লিক। তাদের বদলি হিসেবে নামেন রাফিনিয়া ও ইয়ামাল। তাতে কাজও হয়। মুহুর্মুহু আক্রমণে ওসাসুনার রক্ষণকে কাঁপিয়ে দেয় বার্সা। কিন্তু ওসাসুনাও ছাড় দিচ্ছিল না। দুই পাশ থেকেও আক্রমণে লড়াই জমে ওঠে।
৭০তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় ওসাসুনা। বক্সের ভেতরে আসা ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করেন বার্সার তরুণ ডিফেন্ডার দমিঙ্গেস। স্পটকিক থেকে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন বুদিমির। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় তার দল। এরপর ৮৫তম মিনিটে চতুর্থ গোলটি করে বার্সার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা শেষ করে দেন আবেল ব্রেতোনেস। তবে নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগে একটি গোল শোধ করেন ইয়ামাল। কিন্তু হারের ব্যবধান কমানো ছাড়া তা আর কোনো কাজে আসেনি।
৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে অবশ্য এখনও শীর্ষেই আছে বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট যথাক্রমে ১৭ ও ১৫।
বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
এমএইচএম