ঢাকা: আর্জেন্টিনার জার্সির আদলে পলিথিন কেটে বানানো লিওনেল মেসির ছোট্ট সেই ভক্তের কথা এখনও মনে আছে অনেক ফুটবলপ্রেমীর। ৫ বছর বয়সী সেই ‘খুদে মেসি’কে এবার নিজের দেশ আফগানিস্তান ছাড়তে হয়েছে।
বারবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হওয়া আফগানিস্তানের মেসিভক্ত শিশু মুর্তজা আহমাদিকে খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে।
আর্জেন্টাইন দলপতি মেসি তার এই খুদে ভক্তের কথা জানতে পেরে নিজের জার্সি পাঠিয়েছিলেন। মুর্জতা আহমাদিকে নিজের স্বাক্ষর করা একটি জার্সি ইউনিসেফের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন বার্সেলোনার মহাতারকা।
পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ী বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসির জার্সি পাঠানোর পর থেকে রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া মুর্তজা ও তার পরিবারকে খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আর দুঃখজনক হলেও সত্য যে এ কারণে মুর্তজাকে তার জন্মভূমি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, কে বা কারা একাধিকবার ফোন করে মুর্তজা আহমাদিকে অপহরণ করার হুমকি দিয়ে আসছিল। তার বাবাকে ছেলের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
এমন বাজে পরিস্থিতিতে প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে মুর্তজার পরিবার। আফগানিস্তান ছেড়ে তারা পাড়ি জমিয়েছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটাতে আশ্রয় নিয়েছে মুর্তজার পরিবার। আর এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুদে মেসির বাবা মোহাম্মদ আরিফ আহমাদি।
কোয়েটার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে আরিফ আহমাদি জানান, ‘ওই ঘটনার পর থেকে আমাদের জীবন অনেক যন্ত্রণার মধ্যদিয়ে পার হচ্ছিল। ফোন করে কে বা কারা আমার ছেলেকে অপহরণ করার হুমকি দিচ্ছিল। নিয়মিত আমাদেরকে ফোন করে তাকে হত্যা করার কথা জানানো হয়। তাই নিজেদের সম্পত্তি বিক্রি করে আমরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছি। আমার ছেলের ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জীবন বাঁচাতে নিজ দেশ ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। ’
জার্সি পাঠানোর সময় মেসি জানিয়েছিলেন, আফগান মেসির সঙ্গে তিনি দেখা করতে চান। তবে, সেটি আফগানিস্তানে নয়। হয় স্পেন, না হয় অন্য কোনো দেশে খুদে ভক্তের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে, এখন পর্যন্ত তাদের দেখা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে মুর্তজার বাবা জানান, ‘এখনো মুর্তজা বিশ্বাস করে একদিন সে তার হিরো মেসির সঙ্গে দেখা করতে পারবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, ০৪ মে ২০১৬
এমআর