যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দিয়েগো ম্যারাডোনার সম্পর্ক কখনও ভাল ছিল না। সেই ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে শুরু।
ছিয়াশির মহানায়ক যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হন ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে। কঠিন সে সময়ে তাকে আশ্রয় দেন কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো। দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে চমৎকার এক সম্পর্ক। ফিদেল ছিলেন আমেরিকার চোখে শত্রু।
এছাড়া ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধও হন ম্যারাডোনা। ফুটবল ঈশ্বরের সঙ্গে সেই অনেক আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেননি। কারণ, ট্রাম্পকে ‘পুতুল’ ডেকেছিলেন ম্যারাডোনা।
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য ভিসার আবেদন করেছিলেন ম্যারাডোনা। মিয়ামিতে সাবেক স্ত্রী ক্লোডিয়া ভিলাফেইনের সঙ্গে মামলা লড়ার জন্য তাকে দেশটিতে যেতে হচ্ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সদ্য প্রয়াত ফুটবল কিংবদন্তিতে ভিসা দেয়নি। ম্যারাডোনার ভিসা না পাওয়ার বিষয়টি আর্জেন্টিনার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন তার আইনজীবি ম্যাটিয়াস মরলা।
ঐ সময় ম্যারাডোনাকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে কোনো প্রকার মন্তব্য না করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ক্ষ্যাপাটে ফুটবল ঈশ্বর কার কথা শুনেন! নিজের স্বভাবের বিরুদ্ধে যাননি তিনি। ভিসার আবেদনের সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?’
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি কোনো রাখডাক না রেখে উত্তর দিয়েছিলেন, ট্রাম্পকে তিনি ‘চিরোলিতা’ মনে করেন। চিরোলিতা শব্দের অর্থ হলো পুতুল। আর্জেন্টিনায় এই শব্দ ব্যবহৃত হয় খুব তুচ্ছার্থে। ফলে যা হওয়ার তাই হলো, ম্যারাডোনাকে ভিসা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে রাশিয়ান এক টিভি অনুষ্ঠানেও ট্রাম্পকে নিয়ে ব্যঙ্গার্থক কথা বলেছিলেন ম্যারাডোনা। এমনিতে লাতিন আমেরিকার নায়ক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোরতর শত্রু ভেনেজুয়েলার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের সমর্থক। যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় সন্দেহের চোখে দেখেছে ম্যারাডোনাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
ইউবি